দ্বিতীয় স্ত্রী ও শাশুড়ির যোগসাজশে হত্যা করা হয় মাদ্রাসাশিক্ষককে

আদালত
প্রতীকী ছবি

ফরিদপুরের মধুখালীর মাদ্রাসাশিক্ষক শেখ আল কালাম আজাদকে (৫৮) শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন রাসেল শেখ (২৮)। ওই মাদ্রাসাশিক্ষকের দ্বিতীয় স্ত্রী ও শাশুড়ি এ কাজে রাসেলকে সহযোগিতা করেন। আজ বুধবার বিকেলে ফরিদপুরে ৪ নম্বর আমলি আদালতের জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নুসরাত খানমের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে এ তথ্য জানান রাসেল শেখ।

মধুখালী উপজেলার মেগচামী ইউনিয়নের খালপাড়ি গ্রামের বাসিন্দা রাসেল। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে তিনি আরও জানান, তাঁর সঙ্গে মাদ্রাসাশিক্ষকের দ্বিতীয় স্ত্রীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এ জন্য পথের কাটা দূর করতে তাঁর প্রেমিকা (মাদ্রাসাশিক্ষকের দ্বিতীয় স্ত্রী) এবং প্রেমিকার মায়ের (মাদ্রাসাশিক্ষকের শাশুড়ি) পরামর্শ ও যোগসাজশে তিনি শেখ আল কালাম আজাদকে খুন করেন।

রাসেল শেখের জবানবন্দির সত্যতা নিশ্চিত করে এ হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মধুখালী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মুক্তার হোসেন প্রথম আলোকে জানান, জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করার পর আদালতের নির্দেশে রাসেল শেখকে জেলহাজতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এসআই মুক্তার আরও জানান, আজ আদালতে নিহত মাদ্রাসাশিক্ষকের দ্বিতীয় স্ত্রী ও শাশুড়ির পাঁচ দিন করে রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়। তবে আদালত রিমান্ডের শুনানির দিন পরে ধার্য করা হবে মর্মে সিদ্ধান্ত দিয়ে ওই দুই নারীকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।

নিহত মাদ্রাসাশিক্ষক শেখ আল কালাম আজাদ মধুখালীর মেগচামী ইউনিয়নের রুকুনি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি চরবামুন্দি ইয়াসিন আলী দাখিল মাদ্রাসার ইংরেজি বিষয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক ছিলেন। তাঁর ছেলে তানভীর আহমেদ ওরফে শিমুল উপজেলা কৃষক দলের সদস্যসচিব।

তানভীর আহমেদ জানান, গত রোববার সন্ধ্যার দিকে মধুখালীর বিলআড়ালিয়া বাজার থেকে নিখোঁজ হন তাঁর বাবা। এ ঘটনায় পরের দিন সোমবার মধুখালী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তিনি।

জিডির পর সন্দেহভাজন হিসেবে শেখ আল কালাম আজাদের দ্বিতীয় স্ত্রী, শাশুড়ি ও রাসেল শেখকে আটক করে পুলিশ। পরে তাঁদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গতকাল মঙ্গলবার মধুখালী উপজেলার জাহাপুর ইউনিয়নের কঠুরাকান্দি বিলসংলগ্ন রাস্তার পাশ থেকে শেখ আল কালাম আজাদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুজ্জামান বলেন, ওই মাদ্রাসাশিক্ষক নিখোঁজ হওয়ার পর তাঁর ছেলে যে জিডি করেছিলেন, লাশ উদ্ধারের পর সেটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত করা হয়েছে। পাশাপাশি নিহত ব্যক্তির দ্বিতীয় স্ত্রী, শাশুড়ি ও রাসেল শেখকে এ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।