যুক্তরাষ্ট্রে শামীম ওসমানকে হেনস্তার চেষ্টা, নোয়াখালীতে ছাত্রদল নেতার বাড়িতে হামলা

যুক্তরাষ্ট্রে সংসদ সদস্য শামীম ওসমানকে হেনস্তার চেষ্টার অভিযোগে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে ছাত্রদলের সাবেক নেতা বাদল মির্জার গ্রামের বাড়িতে ছাত্রলীগের ককটেল হামলা। শনিবার সকালে আমকি গ্রামে
ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের জ্যাকশন হাইটসে নারায়ণগঞ্জ-৪ (সদর ও সিটি করপোরেশন একাংশ) আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমানকে হেনস্তার চেষ্টার অভিযোগ তুলে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক নেতা বাদল মির্জার গ্রামের বাড়িতে ককটেল হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে ছাত্রলীগ।

আজ শনিবার সকালে উপজেলার জয়াগ ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের আমকি গ্রামের মিয়াবাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। ছাত্রদল নেতা বাদল মির্জা (৩৬) আমকি গ্রামের আবু বাহারের ছেলে। দেশে থাকতে তিনি সোনাইমুড়ী উপজেলা ও জয়াগ ইউনিয়ন ছাত্রদলের সক্রিয় একজন নেতা ছিলেন।

জয়াগ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শওকত আকবর পলাশ প্রথম আলোকে বলেন, বাদল ৮-১০ বছর আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় চলে যান। সেখান থেকে পরে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে যান।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, আজ সকাল ১০টার দিকে ছাত্রলীগের ১৫ থেকে ২০ জন নেতা-কর্মী মোটরসাইকেলে যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী সাবেক ছাত্রদল নেতা বাদল মির্জার গ্রামের বাড়িতে যান। এ সময় তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রে সংসদ সদস্য শামীম ওসমানকে হেনস্তার চেষ্টার অভিযোগে বাদলের বাড়িতে ১০-১২টি ককটেল বিস্ফোরণ করেন এবং বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর চালিয়ে ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করেন। তবে হামলার সময় ছাত্রদল নেতা বাদলের পরিবারের কোনো সদস্য বাড়িতে ছিলেন না। তাঁরা গতকাল রাতে আত্মগোপন করেন। এ সময় ছাত্রলীগ কর্মীরা বাদলের শাস্তি দাবি করে বিভিন্ন স্লোগান দেন।

হামলার বিষয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ছাত্রদল নেতা বাদল মির্জা দেশে থাকতে ছাত্রদলের একজন ক্যাডার ছিলেন। তিনি ক্ষমতায় থাকতে নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সরকার পরিবর্তন হলে জনগণের রোষানলে পড়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। শামীম ওসমান আওয়ামী লীগের একজন জ্যেষ্ঠ নেতা। তাঁর মতো ব্যক্তিকে হেনস্তার চেষ্টা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। তাই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে বাদলের পরিবারকে সতর্ক করতে ওই বাড়িতে গিয়েছিলেন। এ সময় এলাকার অতি উৎসাহী কিছু ছেলেপেলে বাড়িতে ভাঙচুর করেছে বলে তিনি শুনেছেন।

সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল হক প্রথম আলোকে বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের কেউ থানায় অভিযোগ দেননি কিংবা ফোনেও ঘটনাটি জানাননি। তিনি বিকেলে লোকমুখে ঘটনাটি শুনে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ছাত্রদল নেতার পরিবারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে অভিযোগ দিলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গত বুধবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের জ্যাকসন হাইটসের লিটল বাংলাদেশ (৭৩ স্ট্রিট) এলাকায় যান শামীম ওসমান। তিনি একটি কালো রঙের রেঞ্জ রোভার গাড়িতে ছিলেন। তাঁকে দেখামাত্র রাস্তার বিপরীতে থাকা নিউইয়র্ক মহানগর বিএনপি নেতা রাব্বী, সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক নেতা বাদল মির্জাসহ কয়েকজন ‘ভুয়া, ভুয়া’ বলে স্লোগান দেন। এরপর সেখানে একটি বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। পরে ওই ঘটনার একটি ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।