ফরিদপুরে হামলায় ইউএনওসহ আহত ১০

আশিকুর রহমান চৌধুরী
ছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুরে আশ্রয়ণ প্রকল্পের জায়গার মালিকানার বিরোধ নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার মানববন্ধন হয়। মানববন্ধন চলার সময় ব্যানার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন আনসার সদস্যরা। এ সময় এলাকাবাসীর হামলায় ইউএনও ও ৪ নারীসহ ১০ জন আহত হয়েছেন। বেলা দেড়টার দিকে মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়ন (ইউপি) পরিষদের নিশ্চিন্তপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

আহত ইউএনও আশিকুর রহমান চৌধুরীকে মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়ার পর তাঁকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। আহত অন্যরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই গ্রামে আশ্রয়ণ প্রকল্প করতে একটি জায়গা দেখা হয়। জায়গাটি বর্তমানে বিএস রেকর্ডে সরকারি খাস হলেও আরএস রেকর্ডে ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি। এ নিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনের বিরোধ চলছিল।

বৃহস্পতিবার দুপুরে এলাকার নারীরা ওই জমির মালিকানা তাঁদের দাবি করে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বিরুদ্ধে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছিলেন। এ খবর পেয়ে ইউএনও আনসার সদস্যদের নিয়ে সেখানে যান। আনসার সদস্যরা নারীদের কাছ থেকে মানববন্ধনের ব্যানার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় নারীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। আনসার সদস্যরা রাইফেলের বাঁট দিয়ে কয়েক নারীকে আঘাত করেন।

একপর্যায়ে এক নারী আহত হন। পরে নারীরা ক্ষুব্ধ হয়ে গাছের ডাল ভেঙে আনসার সদস্যদের ওপর হামলা চালান। এ সময় স্থানীয় মাইকেও ঘোষণা দেওয়া হয়। পরে এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। এ সময় হামলায় ইউএনও ও ৪ নারীসহ ১০ জন আহত হন। ওই সময় আনসার সদস্যরা শটগানের তিন–চারটি গুলি ছোড়েন। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ইউএনওর গাড়ি ভাঙচুর করেন। পরে মধুখালী থানার পুলিশ ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

ডুমাইন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শাহ আসাদুজ্জামান বলেন, তিনি একটি সালিসে ছিলেন। তিনি জানতেন না ইউএনও ওই এলাকায় এসেছেন। পরে ইউএনওর ফোন পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে আসেন।

সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালী সার্কেল) সুমন কর জানান, পুলিশের একটি টহল দল ঘটনাস্থলের কাছাকাছি থাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়। পরে ফরিদপুর জেলা প্রশাসক ঘটনাস্থলে আসেন।

জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, ইউএনওর বাঁ চোখে আঘাত লেগেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেলাই করে তাঁকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পুলিশ সুপার মো. শাজাহানও ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন। পুলিশ অভিযান শুরু করবে।