ছয় দিনেও ধরা পড়েনি সেই পাগলা মহিষ, গুলিবিদ্ধ যুবক শঙ্কামুক্ত

নারায়ণগঞ্জ জেলার মানচিত্র

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় কোরবানির হাট থেকে পালিয়ে যাওয়া সেই পাগলা মহিষ ছয় দিনেও ধরা পড়েনি। পুলিশ ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা এখন আর মহিষটিকে খুঁজে পাচ্ছেন না। মহিষ ধরতে গিয়ে পুলিশের ছোড়া গুলিতে আহত যুবক এখন শঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন স্বজনেরা।

আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদুল হক তৈয়ব প্রথম আলোকে বলেন, ঈদের আগের রাতে বাঁধন ছিঁড়ে পালিয়ে যাওয়া মহিষটিকে ধরতে গত শুক্রবার সকালে গুলি ছোড়ার পর সেই গুলি ভুলবশত স্থানীয় এক যুবকের গায়ে লাগে। পুলিশ ও গ্রামবাসী সেই যুবককে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এর মধ্যে মহিষটি গ্রামবাসীর তাড়া খেয়ে আড়াইহাজারের ছনপাড়া এলাকায় একটি বিলের ভেতর পালিয়ে যায়। সেদিন থেকেই টানা বৃষ্টি শুরু হলে বিলটি অন্তত চার ফুট গভীর পানিতে তলিয়ে যায়। পরে ঢাকা জাতীয় চিড়িয়াখানা থেকে ট্রাঙ্কুইলাইজার (চেতনানাশক) নিয়ে আসা হলেও মহিষটিকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। আজ মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত পুলিশ খোঁজ করছে বলে জানান তিনি।

আরও পড়ুন

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সজল কুমার দাসের দাবি, মহিষটি বিলের ভেতর পালায়নি; বরং মহিষটিকে কেউ ধরে নিয়ে গেছে। গতকাল সোমবার রাতে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘শুক্রবার সকালে গুলির ঘটনার পর পুলিশ ও স্থানীয় মানুষ গুলিবিদ্ধ যুবককে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এর মধ্যে প্রচণ্ড বৃষ্টি শুরু হলে লোকজন চলে যায়। আমরা মনে করছি, দীর্ঘ সময় মহিষটি বৃষ্টিতে ভেজার কারণে শান্ত হয়ে যায়। পরে আশপাশের কেউ মহিষটিকে ধরে নিয়ে গেছে।’

প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার এমন মনে হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শুক্রবার আমরা জাতীয় চিড়িয়াখানা থেকে ট্রাঙ্কুইলাইজার নিয়ে আসি। এ সময় স্থানীয় চেয়ারম্যানসহ আশপাশের ইউনিয়ন, থানা ও প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের মহিষটির বিষয়ে খোঁজ করতে বলা হয়। তাঁরা কেউ মহিষটির খোঁজ দিতে পারেনি। এ ছাড়া আমরা গ্রামবাসীকে নিয়ে ওই বিলে মহিষটির খোঁজ করেছি। মহিষটি এখনো ছাড়া অবস্থায় থাকলে কারও না কারও চোখে পড়ত। তা ছাড়া মহিষের মনস্তত্ত্ব হলো সে কোথাও আক্রান্ত হলে ওই স্থানে আর থাকে না। অন্তত ১০ কিলোমিটার দূরে চলে যায়।’

মহিষটির এমন বেপরোয়া হয়ে ওঠার কারণ জানতে চাইলে সজল কুমার দাস বলেন, ‘আবহাওয়া, উচ্চ শব্দসহ প্রতিকূল যেকোনো পরিবেশেই মহিষ বেপরোয়া হয়ে উঠতে পারে। সে ক্ষেত্রে কাজ হলো মহিষটিকে বিরক্ত না করা। কিন্তু স্থানীয় মানুষ মহিষটিকে কোচ, বল্লম, লাঠিসোঁটা নিয়ে ধাওয়া করে। তখনই মহিষটি আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে ওঠে।’

এদিকে মহিষটিকে থামানোর জন্য পুলিশের ছোড়া গুলিতে বিদ্ধ যুবক মো. শান্ত আজ সকাল পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি এখন আশঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন তাঁর মা রিনা বেগম। রিনা বেগম বলেন, শান্তর পেটের নিচের অংশে গুলি লেগেছে। গত রোববার তাঁর সেখানে একটি সফল অস্ত্রোপচার হয়েছে। সে এখন আশঙ্কামুক্ত। শান্তর সব চিকিৎসাব্যয় পুলিশ বহন করছে বলেও জানান তিনি।