নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়ায় বগুড়ায় বিএনপির ১৭ নেতা-কর্মীকে দল থেকে বহিষ্কার

বিএনপি

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রচারণায় অংশ নেওয়ায় বগুড়ায় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ১৭ নেতা-কর্মীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এর মধ্যে দুজন ইউপি চেয়ারম্যানও রয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার রাতে জেলা বিএনপি, জেলা যুবদল ও ছাত্রদলের পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

বগুড়া জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক কে এম হ‌ুমায়ূন কবির স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বিএনপি থেকে ১১ জনকে বহিষ্কারের কথা জানানো হয়েছে। তাঁরা হলেন কাহালু উপজেলা বিএনপির সদস্য ও উপজেলার কালাই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জোবায়দুল ইসলাম ওরফে সবুজ, উপজেলা বিএনপির সদস্য ও দুর্গাপুর ইউপি চেয়ারম্যান শাহ মেহেদী হাসান ওরফে রঞ্জু, কাহালু সদর ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য আবদুল মান্নান, কাহালু পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন, সারিয়াকান্দি উপজেলা বিএনপির সদস্য মুশফিকুর রহমান, সহিদুল ইসলাম ওরফে স্বপন, সারিয়াকান্দি পৌর বিএনপির সদস্য লুৎফর রহমান, পৌর বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মতিউর রহমান, পৌর বিএনপির সদস্য সাইফুল ইসলাম, শাহজাহান আলী ও সোহেল সরকার।

আরও পড়ুন

জেলা যুবদলের আহ্বায়ক খাদেমুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে যুবদল থেকে পাঁচজনকে বহিষ্কারের কথা জানানো হয়েছে। তাঁরা হলেন কাহালু উপজেলা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক জিল্লুর রহমান, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবর রহমান ও জাহিদ হাসান, বীরকেদার ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক এম এ কুদ্দুস এবং সোনাতলা উপজেলার পাকুল্যা ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রাকিব হাসান। এ ছাড়া জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দিকী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে কাহালু উপজেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি মাসুদ রানাকে বহিষ্কারের কথা জানানো হয়েছে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন বিএনপিদলীয় সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মোল্লা। বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য মোহাম্মদ শোকরানা। এ দুই প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় অংশ নেওয়ায় দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ওই ১৭ নেতা-কর্মীকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

এ ব্যাপারে কাহালু উপজেলা বিএনপির সদস্য ও কালাই ইউপি চেয়ারম্যান জোবায়দুল ইসলাম বলেন, ‘জনপ্রতিনিধি হওয়ায় অনেকের সঙ্গে মিশতে হয়। দলের সাবেক সদস্য জিয়াউল হক মোল্লা গণসংযোগে এলে কুশল বিনিময় করেছি। সেই ছবি কেউ ফেসবুকে ছড়িয়েছে। এখন সেই অপরাধে আমাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জিয়াউল হক মোল্লার বাবা আজিজুল হক মোল্লা বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ছিলেন। ১৯৭৯ ও ১৯৯১ সালের সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৪ আসন থেকে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৩ সালে তিনি মারা গেলে তাঁর ছেলে জিয়াউল হক মোল্লা উপনির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে জয়ী হন। ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনেও তিনি বিএনপির মনোনয়নে সংসদ সদস্য হন। পরে দলটির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হন। এক-এগারোর সময় তিনি বিএনপিতে ‘সংস্কারপন্থী’ হিসেবে পরিচিতি পান। ২০০৮ সালের নির্বাচনে তাঁকে বাদ দিয়ে মোস্তফা আলীকে মনোনয়ন দেয় বিএনপি। ২০১৮ সালের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের খসড়া তালিকায় তিনি ছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁর বদলে মোশারফ হোসেনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন

অন্যদিকে ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-১ আসনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছিলেন মোহাম্মদ শোকরানা। ২০১৯ সালের ৯ অক্টোবর বিএনপি থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন তিনি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত শোকরানা পদত্যাগপত্রে লিখেছিলেন, ‘ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণে দলের সব পদ থেকে পদত্যাগ করলাম। এখন থেকে বিএনপির সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই।’

আরও পড়ুন