অন্যের জন্য তদবির করতে গিয়ে নিজেই পুলিশের জালে পৌর কাউন্সিলর

জাহিদুর রহমান

একটি মামলায় তদবির করতে নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কক্ষে চেয়ারে বসে চা পান করছিলেন পৌর কাউন্সিলর জাহিদুর রহমান। হঠাৎ ওসির মুঠোফোনে একটি খুদে বার্তা আসে, তাঁর সামনে বসা ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের একটি মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে। পরে চা পান শেষে ওসির নির্দেশে তাঁকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠান।

জাহিদুর রহমান নাটোর পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। তিনি বর্তমান সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলামের ঘনিষ্ঠ হিসেবেও পরিচিত। আগে তিনি পৌর বিএনপির নেতা ছিলেন। বিএনপির নেতা রুহুল কুদ্দুস তালুকদারের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। ২০১৪ সালের যে মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তখন তিনি বিএনপি করতেন। দল ছাড়লেও মামলা ছাড়েনি তাঁকে।

থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নাটোর পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের এক বাসিন্দার সাইবার আইনের একটি মামলার তদবির করতে দুপুরে সদর থানায় যান কাউন্সিলর জাহিদুর রহমান। ওসির সামনের চেয়ারে বসে ছিলেন। তাঁকে চা দিয়ে আপ্যায়নও করা হয়। হঠাৎ ওসি জানতে পারেন, সামনে বসা ব্যক্তির বিরুদ্ধে থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের একটি মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে। তিনি পরোয়ানার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর একজন উপপরিদর্শক তাঁকে গ্রেপ্তার করেন। এ সময় তাঁর বিরুদ্ধে নাটোর দায়রা আদালতের বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের একটি বিচারাধীন মামলার পরোয়ানা দেখানো হয়।

জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী মালেক শেখ বলেন, জাহিদুর ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য। তিনি পুরোনো একটি মামলার আসামি ছিলেন। ওই মামলায় জামিনেও ছিলেন। কিন্তু হাজিরা না দেওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে পরোয়ানা হয়েছিল। বিষয়টি তিনি জানতেন না। জনপ্রতিনিধি হিসেবে একজনের একটি মামলার ব্যাপারে কথা বলতে থানায় গেলে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। দায়রা জজ আদালত বন্ধ থাকায় তাঁর জামিন করানো যায়নি।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমি থানায় নতুন এসেছি। কাউকে তেমন একটা চিনি না। দুপুরে একজন কাউন্সিলর এসেছিলেন আমার কাছে। পরে জানতে পারি, তাঁর বিরুদ্ধে দায়রা জজ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে। কর্তব্য পালনের জন্য তাঁকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’ তিনি বলেন, পরে খোঁজ নিয়ে শুনেছেন, ২০১৪ সালে ওই মামলা যখন হয়, তখন তিনি বিএনপি করতেন।