ঢাকা-১ আসন
মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন নৌকা ও লাঙ্গলের প্রার্থী
এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সালমান এফ রহমান এবং জাতীয় পার্টির প্রার্থী সালমা ইসলাম। দুজনই জোরাল প্রচারণা চালাচ্ছেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১ (দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলা) আসনের নির্বাচনী এলাকায় বর্তমান ও সাবেক সংসদ সদস্যের প্রচার-প্রচারণায় সরগরম হয়ে উঠেছে ভোটের মাঠ। তাঁদের একজন নৌকার এবং অপরজন লাঙ্গলের প্রার্থী।
নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হলেন দেশের অন্যতম বড় শিল্প গ্রুপ বেক্সিমকোর কর্ণধার এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা, বর্তমান সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমান। আর লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী হলেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য ও যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান সালমা ইসলাম।
নৌকা ও লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থীরা এসে আমাদের কাছে ভোট চেয়েছেন। যাকে আমরা আমাদের বিপদে পাশে পাব ও যে আমাদের এলাকার উন্নয়ন করবেন, তাকে আমরা ভোট দেব।জব্বার মিয়া, দোহারের কার্তিকপুর এলাকার ভোটার
২০০১ সালে এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে প্রথমবার লড়েন সালমান এফ রহমান। ওই নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে হেরে যান বিএনপির নাজমুল হুদার কাছে। সে সময় আসনটি ছিল কেবল দোহার উপজেলা নিয়ে।
২০০৮ সালে বিএনপির প্রার্থী আবদুল মান্নানকে পরাজিত করে বিজয়ী হন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবদুল মান্নান খান। ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনের সংসদ সদস্য হন সালমা ইসলাম। ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির মহাজোট থেকে মনোনয়ন পান সালমান এফ রহমান। সেবার দলের প্রতীক না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন সালমা ইসলাম। ওইবার নির্বাচনে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ালেও ভোটের ফল ছিল সালমান এফ রহমানের পক্ষে।
ঢাকা-১ আসনের সংসদীয় এলাকা ঘুরে দেখা যায়, জনসমাগমস্থল ও সড়কের গুরুত্বপূর্ণ মোড় এলাকায় সালমান এফ রহমান ও সালমা ইসলামের পোস্টারে ছেঁয়ে আছে। বিভিন্ন এলাকায় তৈরি অস্থায়ী নির্বাচনী ক্যাম্পের মাধ্যমে চলছে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা। অটোরিকশা ও পিকআপ ভ্যানে করে গানবাজনা ও মাইকিংয়ের মাধ্যমে ঘুরে ঘুরে চাওয়া হচ্ছে ভোট।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা নিজ নিজ কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তাঁদের নির্বাচনী এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন। চালিয়ে যাচ্ছেন জনসংযোগ, উঠান বৈঠক আর সমাবেশ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও সরব উভয় প্রার্থী।
বিভিন্ন এলাকায় প্রচার–প্রচারণা ও সভা–সমাবেশগুলোতে ঢাক–ঢোল পিটিয়ে উপস্থিত হচ্ছেন সালমান এফ রহমান। গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের ফিরিস্তি তুলে ধরছেন। দিচ্ছেন বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি। জয়ের বিষয়ে তিনি আশাবাদী।
সালমান এফ রহমান প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, এবার তিনি নির্বাচিত হলে সমাজ থেকে মাদক নির্মূলের জন্য খেলাধুলার প্রতি কিশোর ও তরুণদের আকৃষ্ট করতে একাধিক মিনি স্টেডিয়াম তৈরি করবেন। দোহার নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৫০ থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করাসহ কয়েকটি নতুন কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করবেন। তিনি জয়ের বিষয়ে শতভাগ আশাবাদী বলে প্রচারণায় উল্লেখ করছেন।
অন্যদিকে সালমা ইসলাম দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে দোহার-নবাবগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় লিফলেট বিতরণসহ ভোটারদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা ও দলীয় নেতা-কর্মীদের উঠান সঙ্গে বৈঠক করছেন। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বিপুল ভোটে পাস করবেন বলে দাবি করেন সালমা ইসলাম।
নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি তুলে ধরে সালমা ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘২০১৪ সালে আমি ঢাকা-১ আসনের সাংসদ নির্বাচিত হয়ে দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলায় ব্যাপক উন্নয়ন কাজ করেছি। রাক্ষসী পদ্মার গ্রাস থেকে পদ্মার তীরবর্তী মানুষকে রক্ষার জন্য বাঁধের নির্মাণ কাজ শুরু করেছিলাম। আমি নির্বাচিত হলে এ অসমাপ্ত কাজ শেষ করার অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এ আসনের জনগণের প্রাণের দাবি হচ্ছে, বাড়িতে বাড়িতে গ্যাস–সংযোগ দেওয়া। আমি নির্বাচিত হলে এ দাবি শিগগিরই পূরণ করব।’