স্ত্রীকে হত্যার ঘটনায় জামিনে থাকা ছেলের নামে বাবার মামলা
শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ঘড়িষার বাজার এলাকায় নার্গিস আক্তার (৪০) নামের গৃহবধূ হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে নিহত নার্গিসের স্বামী সেলিম মাঝি বাদী হয়ে তাঁদের বড় ছেলে মেহেদী হাসানকে (২৪) আসামি করে হত্যা মামলাটি করেন। এর আগে সন্ধ্যার দিকে নার্গিসকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মেহেদী হাসানকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছেন স্বজনেরা।
নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তার মেহেদীকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। হত্যার কারণ এখনো পরিষ্কার নয়। তবে তাঁর আচরণ অসংলগ্ন।
পরিবার, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ঘড়িষার বাজারে ব্যবসায়ী সেলিম মাঝির ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান আছে। পাশে এক বাড়িতে স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে থাকেন। গতকাল দুপুরে নার্গিস আক্তার একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বিকেলে বাড়িতে ফেরেন। তাঁর স্বামী সেলিম ও মেজ ছেলে নাহিদ তাঁদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে যান। আর ছোট ছেলে স্কুলে ছিল। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে বড় ছেলে মেহেদী ঘরের দরজা বন্ধ করে মায়ের চোখে মরিচের গুঁড়া ছুড়ে মারেন। এরপর বঁটি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করেন। খবর পেয়ে সেলিম মাঝি এসে ঘরের দরজা ভেঙে স্ত্রীকে উদ্ধার করেন। চিকিৎসার জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে তিনি মারা যান।
নিহত নার্গিসের স্বামী সেলিম মাঝি প্রথম আলোকে বলেন, ‘মেহেদী কেন এমন করল, আমরা বুঝতে পারছি না। ২০২১ সালে একটি মামলায় র্যাব ওকে গ্রেপ্তার করে। মামলাটি জঙ্গি তৎপরতা নাকি হেফাজতের সঙ্গে কোনো ঘটনা, তা আমার জানা নেই। সে সময় সাত মাস কারাগারে থাকার পর ওই মামলায় মেহেদী জামিন পায়। এর পর থেকে তাকে আমাদের কাছে রেখেছিলাম। বাড়িতে আলাদা একটি কক্ষে থাকত, নামাজ-রোজা করত।’
এ ঘটনায় ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে মেহেদী হাসানকে বলতে শোনা যায়, ‘আমার পেছনে আমার পরিবার দীর্ঘদিন থেকে ষড়যন্ত্র করে আসছিল। আমার দ্বীন থেকে আমাকে দূরে সরিয়ে রাখাতে আমি মেরেছি।’