নাটোর সদর হাসপাতালে এক দিনেই এক এলাকার দেড় শ ডায়রিয়া রোগী ভর্তি
নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে মঙ্গলবার রাত থেকে হঠাৎ করে ‘অস্বাভাবিক হারে’ ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। বুধবার দুপুর পর্যন্ত ভর্তি রোগীর সংখ্যা দাঁড়ায় ১৪৭। সব রোগী শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ঝাউতলা এলাকার বাসিন্দা। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে স্বাস্থ্য বিভাগ পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে।
সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাতে শহরের ঝাউতলা ও আশপাশের কয়েকটি এলাকা থেকে কয়েকজন ব্যক্তি পেটে ব্যথা ও পাতলা পায়খানার মতো উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে একই এলাকা থেকে দলে দলে রোগী আসতে শুরু করেন। রাতেই ভর্তি হন ৩৫ জন। সকাল পর্যন্ত ৬৫ জন এবং বেলা দুইটা পর্যন্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ায় ১৪৭। ভর্তি রোগীদের মধ্যে পুরুষ ৬৬ জন, নারী ৫৫ জন এবং শিশু ২৬ জন। তবে বিকেল নাগাদ ১৯ জন রোগী চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, ১২৮ জন রোগী ভর্তি আছেন।
রোগী বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে চিকিৎসকের সংখ্যা বাড়ানো হয়। বিশেষ ব্যবস্থায় ডায়রিয়া স্যালাইনের সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়। দুপুরে জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন ও সিভিল সার্জন মোহাম্মদ মুক্তাদির আরেফিন সদর হাসপাতাল পরিদর্শন করে রোগীদের খোঁজখবর নেন। পরে একই এলাকা থেকে বিপুলসংখ্যক মানুষ অসুস্থ হওয়ার কারণ অনুসন্ধানে হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট (মেডিসিন) রবিউল আউয়ালকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। অন্য সদস্যরা হলেন চিকিৎসক আবু সাঈদ, সোহরাব হোসেন, নাজমা বেগম ও শ্রাবন্তী।
জেলা সিভিল সার্জন ও সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মোহাম্মদ মুক্তাদির আরেফিন বলেন, ‘শহরের বিশেষ একটি এলাকা থেকে রোগীরা আসছেন। এতে ধারণা করা হচ্ছে, পানিবাহী কোনো জীবাণু থেকে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব হচ্ছে। রোগীরা সবাই পৌরসভার সরবরাহ করা পানি ব্যবহার করেছেন বলে জানা গেছে। আমরা পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বাড়ি বাড়ি পৌঁছানোর উদ্যোগ নিয়েছি। হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের জন্য পর্যাপ্ত ওষুধ ও চিকিৎসক রয়েছে।’
জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন জানিয়েছেন, পৌরসভার পানি সরবরাহ লাইনে কোনো সমস্যা আছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে পৌর কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারা অনুসন্ধান শুরু করেছে।