সুনামগঞ্জে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় নূরুল হুদাকে আ.লীগ থেকে অব্যাহতি

নূরুল হুদা ওরফে মুকুট
ছবি: সংগৃহীত

দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি নূরুল হুদা ওরফে মুকুটকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

আজ সোমবার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এনামুল কবির স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে নূরুল হুদাকে বিষয়টি জানানো হয়। জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দিকী বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।

নূরুল হুদা সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদের বর্তমান প্রশাসকের দায়িত্বে আছেন। ২০১৬ সালের নির্বাচনে তিনি বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে চেয়ারম্যান পদে জয়ী হন। এবার চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের আরেক সহসভাপতি খায়রুল কবির ওরফে রুমেন। তাঁর প্রতীক ঘোড়া। নূরুল হুদা পেয়েছেন মোটরসাইকেল প্রতীক।

চিঠিতে নূরুল হুদার উদ্দেশে বলা হয়েছে, চলমান জেলা পরিষদ নির্বাচনে ৬১টি জেলায় চেয়ারম্যান পদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা মনোনয়ন দিয়েছেন। কিন্তু নূরুল হুদা মুকুট দলের নির্দেশ অমান্য করে দলের প্রার্থীর বিপক্ষে নির্বাচনে অংশ নিয়ে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেন। এই পরিস্থিতিতে ১৭ সেপ্টেম্বরে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটি জরুরি সভা আহ্বান করে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত মোতাবেক নূরুল হুদাকে বিদ্রোহী প্রার্থী থেকে মনোনয়ন প্রত্যাহারের অনুরোধ করা হয়। তবে নূরুল হুদা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। এর ফলে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের সিদ্ধান্ত অমান্য করায় গঠনতন্ত্রের ৪৭(১১) ধারা অনুযায়ী নূরুল হুদাকে আওয়ামী লীগ সুনামগঞ্জ জেলার সহসভাপতি পদসহ দলীয় সব পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো।

এ প্রসঙ্গে নূরুল হুদা বলেন, জেলা কমিটির কাউকে এভাবে অব্যাহতি দেওয়ার এখতিয়ার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেই। তাঁরা নিজেরাই গঠনতন্ত্রবিরোধী কাজ করছেন। নির্বাচনে ভোটার ও দলীয় নেতা-কর্মীদের বিভ্রান্ত করতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে এসব করা হচ্ছে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নূরুল হুদা ১৬ বছর জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এখন তিনি জেলা কমিটির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি। জেলা পরিষদের গত নির্বাচনে তিনি দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে বিপুল ভোটে জয়ী হন। তখন দলীয় মনোনয়ন পেয়েছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এনামুল কবির, কিন্তু তিনি জয়ী হতে পারেননি। এবার তাঁর বড় ভাই খায়রুল কবির দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। খায়রুল ছাত্রলীগ, যুবলীগের পর এখন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। তিনি সুনামগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌসুঁলি (পিপি) ছিলেন। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার আগে এই পদ ছাড়েন তিনি।