খুলনায় গণসমাবেশে যাওয়ায় বিএনপি কর্মীর বাড়িতে হামলা, আহত ৪

বাগেরহাটের কচুয়ার জুবাই গ্রামে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা বিএনপির এক কর্মীর বাড়ি ভাঙচুর করে। রোববার তোলা
ছবি: প্রথম আলো

খুলনায় বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশে অংশ নেওয়ায় বাগেরহাটের কচুয়ায় এক বিএনপি কর্মীর বাড়িতে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা–কর্মীরা হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে দুই নারীসহ চারজন আহত হয়েছেন। রোববার দুপুরে কচুয়া উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়নের জুবাই গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

আহত ব্যক্তিরা হলেন কচুয়া উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়নের জুবাই গ্রামে এশারত আলী শেখ, তাঁর ছেলে ইখলাসুর রহমান, স্ত্রী শাহানারা বেগম ও প্রতিবেশী রুনা আক্তার। তাঁদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ইখলাসুর রহমানকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রোববার রাতে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালাম প্রথম আলোকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

এম এ সালাম বলেন, ‘খুলনার সমাবেশে যোগ দেওয়ায় আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা কচুয়ায় আমাদের এক কর্মীর বাড়িতে হামলা ও মারধর করেছে। এতে গুরুতর আহত ইখলাসুর রহমানকে খুলনা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। এই হচ্ছে ক্ষমতাসীনদের গণতন্ত্রের নমুনা।’ তিনি আরও বলেন, ‘কচুয়াসহ সব এলাকাতেই বিএনপির নেতা–কর্মীদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বিএনপির নেতা–কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তারা তল্লাশি চালাচ্ছে। আমাদের নেতা–কর্মীরা রাস্তাঘাটে, বাজারে বের হতে পারছেন না।’

ইখলাসুর রহমানের বাবা এশারত আলী শেখ বলেন, ‘বিএনপির গণসমাবেশে যোগ দিতে খুলনায় গিয়েছিল ইখলাসুর। এ অপরাধে স্থানীয় নেতারা দুপুরে আমাদের বাড়িতে এসে হামলা চালায়। তারা মেরে আমার ছেলের হাত-পা ভেঙে দেয়। তারা আগেই ঘোষণা দিয়েছিল, এলাকার যারাই বিএনপির সমাবেশে যাবে, তাদের দেখে নেবে।’
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইখলাসুর মুঠোফোনে বলেন, ‘শনিবার দুপুরে আমি বাড়ি ছিলাম। হঠাৎ ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আরজু, ছাত্রলীগের সভাপতি জসিম মাঝিসহ সাত-আটজন আমাদের বাড়িতে হামলা করে। সবাই মিলে আমাকে বাঁশ দিয়ে মারছিল। গালিগালাজ করতে করতে বলতে থাকে, ‘‘খালেদা জিয়া তোর মা হয়, যে সমাবেশে যাইস।’’’

তবে ইখলাসুরদের বাড়িতে হামলা ও তাঁদের মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি জসিম মাঝি বলেন, ‘মারধর করা হয়েছে, এ অভিযোগ সত্য নয়। এলাকায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতা–কর্মীরা একসঙ্গে ঘোরাফেরা করছেন, স্থানীয় ইউপি সদস্যও ছিলেন। ওই বাড়িতে যখন যাওয়া হয়, তখন তাঁর (ইখলাসুর) মার কাছে জিজ্ঞেস করছি, ইখলাসুর কি বাড়ি আছে। সুমন মেম্বার ওর কাছে টাকা পাবে। ওই পাওনা টাকা চাইতে আমরা গেছিলাম। তখন ওর মা একটা লাঠি নিয়ে আমার দিকে তেড়ে আসেন। ইখলাসুর তখন বাড়িতে ছিল না। তার মায়ের সঙ্গে কিছুটা কথা–কাটাকাটি হয়েছে। আর কিছু না।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘এ ধরনের কোনো বিষয় আমাদের জানা নেই। এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’