মাধবদীতে হেলে পড়ল নির্মাণাধীন সাততলা বাণিজ্যিক ভবন

জজ ভূঁইয়া গ্রুপের হেলে পড়া সাততলা বাণিজ্যিক ভবন
ছবি: সংগৃহীত

নরসিংদীর মাধবদী উপজেলায় জজ ভূঁইয়া গ্রুপের একটি সাততলা বাণিজ্যিক ভবন হেলে পড়ে বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। নির্মাণকাজের শেষের দিকে ভবনটি ঘষামাজা ও রং করার কাজ চলছিল। ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় আজ শুক্রবার সকাল থেকে নিজেদের উদ্যোগে ভবনটি ভেঙে ফেলার প্রক্রিয়া শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ।

ভবনটির অবস্থান মাধবদীর ব্যবসাকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ব্যস্ততম ব্যাংকপট্টি এলাকায়। এর আশপাশে আরও অন্তত ১০টি সুউচ্চ বাণিজ্যিক ভবন আছে। ভবনগুলোর ঠিক পেছনেই পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ। ভবন কর্তৃপক্ষের দাবি, জেলার ছয়টি নদ-নদী পুনঃখনন প্রকল্পের আওতায় পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদে খননকাজ চলায় ভবনটির নিচের মাটি সরে গিয়ে এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

ভবন কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ভবনটি এক পাশে হেলে যায়। তখন ভবনটির বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখতে পান স্থানীয় লোকজন। খবর পেয়ে দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহেদী মোর্শেদ, মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রকীবুজ্জামান ও মাধবদী পৌরসভার মেয়র মোশাররফ হোসেন প্রধান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় নরসিংদী ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা মো. রায়হানের নেতৃত্বে একটি দল ওই ভবনের বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখেন। জনস্বার্থে ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় কর্তৃপক্ষকে নিজ উদ্যোগে হেলে পড়া ভবনটি ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেন পৌর মেয়র মোশাররফ হোসেন প্রধান।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নির্মাণশ্রমিকেরা সাততলা ভবনটির ছাদের অংশ ভাঙার কাজ করছেন। ওপর থেকে ভেঙে ফেলা ইট-সুরকি নিচে নামিয়ে আনা হচ্ছে।

ভবন কর্তৃপক্ষ বলছে, আজ শুক্রবার সকাল থেকে ভবনটি ভাঙার কাজ শুরু করা হয়েছে। নির্মাণশ্রমিকেরা ভবনটির সাততলার ছাদ ভাঙার কাজ শুরু করেছেন। দ্রুত ভবনটি ভেঙে ফেলার কাজ শেষ করা হবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পাশের ভবনের একজন ব্যবসায়ী বলেন, জজ ভূঁইয়া গ্রুপের ওই ভবনের নির্মাণকাজ শুরুর প্রথম থেকেই ত্রুটিপূর্ণ ছিল। সাততলা ভবনের জন্য যে পরিমাণ পাইলিং প্রয়োজন ছিল, তা করা হয়নি। ভবনটির অবস্থান নদের ঠিক পাড়ে হওয়ায় কর্তৃপক্ষের আরও সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার ছিল। তিনি বলেন, ভবনটি তিন দিন আগে একদিকে কিছুটা হেলে যায়। গতকাল সকালে আরও একটু হেলে পড়লে বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দেয়। এতে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়।

পৌর মেয়র মোশাররফ হোসেন প্রধান প্রথম আলোকে বলেন, ভবন হেলে পড়ার ঘটনা শুনে তিনি ঘটনাস্থলে যান এবং পরিস্থিত দেখেন। গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় ভবনটি ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। খোঁজ পেয়েছেন, আজ সকাল থেকেই ভবনটি ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে।

জজ ভূঁইয়া গ্রুপের ব্যবস্থাপক মেহের আলী বলেন, সব ধরনের নিয়মনীতি মেনে ও যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে ভবনটির নির্মাণকাজ চলছিল। কোথাও কোনো ত্রুটি রাখা হয়নি। কিন্তু পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদে খননকাজ চলায় বড় বড় গর্তের কারণে নিচের মাটি সরে গিয়ে ভবনটি হেলে পড়েছে। তাঁরা এখন ভবনটি ভাঙার কাজ করছেন।