দাম্পত্য কলহে হস্তক্ষেপ করায় প্রতিবেশীর শিশুকে হত্যা করে মাটিচাপা
গাজীপুরে দাম্পত্য কলহে হস্তক্ষেপ করার জেরে প্রতিবেশীর শিশুকে হত্যার পর মাটিচাপা দেওয়ার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার তাঁকে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (গোয়েন্দা) ইব্রাহিম খান তাঁর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান।
গ্রেপ্তার ওই ব্যক্তির নাম তাহারুল মিয়া (৩৫)। তিনি রংপুরের পীরগঞ্জ থানার জামালপুর গ্রামের ইয়াসিন আলীর ছেলে। তাহারুল পেশায় রাজমিস্ত্রি।
১৩ মার্চ সন্ধ্যায় সাখাওয়াত বাড়ির পাশে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। কোথাও তাঁর সন্ধান না পেয়ে পরদিন তাঁর মা বাসন থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরে সাখাওয়াতের বাবা জাফর আলী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি মামলা করেন।
উপকমিশনার ইব্রাহিম খান বলেন, ১৫ মার্চ বিকেলে গাজীপুর মহানগরীর ইসলামপুর এলাকায় মৃত এক শিশুর পা বের হয়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় লোকজন। পরে ৯৯৯–এর মাধ্যমে কল পেয়ে বাসন থানা–পুলিশ মাটিচাপা দেওয়া অবস্থায় ছয় বছরের এক শিশুর লাশ উদ্ধার করে। খবর পেয়ে শিশুর বাবা জাফর আলী ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুটি তাঁর ছেলে সাখাওয়াতের বলে শনাক্ত করেন। এ ঘটনায় জাফর আলী বাদী হয়ে বাসন থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার পর পুলিশ সিসিটিভির ফুটেজ বিশ্লেষণ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় গত বুধবার গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থেকে হত্যায় অভিযুক্ত তাহারুল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আসামি তাহারুল বলেছেন, সাখাওয়াতের চাচাতো বোন শারমিনের সঙ্গে দুই বছর আগে তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তাঁরা ভোগড়া পেয়ারা বাগান এলাকায় সাখাওয়াতের পরিবারের সঙ্গে একই বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। বিয়ের পর থেকে শারমিন ও তাহারুলের মধ্যে দাম্পত্য কলহ চলছিল। ১৩ মার্চ বিকেলে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে তাঁদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। এ সময় সাখাওয়াতের মা তাহারুলকে শাসন ও বকাঝকা করেন। এতে তাহারুল ক্ষিপ্ত হয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। এ সময় সাখাওয়াতকে বাড়ির সামনে পেয়ে তাঁকে সঙ্গে নেন তাহারুল। দোকান থেকে খাবার কিনে দেওয়ার কথা বলে কৌশলে মহানগরের ইসলামপুর এলাকার ১৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর অফিসের পশ্চিমে সদ্য মাটি ভরাট করা একটি ফাঁকা জমিতে নিয়ে যান। পরে সেখানে সাখাওয়াতকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশ মাটিচাপা দেন তাহারুল।