বগুড়ায় ৭ বছর পর আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে বিএনপির সমাবেশ
দীর্ঘ সাত বছর পর বগুড়া শহরের ঐতিহাসিক আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে সমাবেশ করেছে বিএনপি। আজ শনিবার কেন্দ্রঘোষিত গণমিছিল কর্মসূচির আগে পুলিশের বাধা ছাড়াই এই সমাবেশ করতে পেরেছে জেলা বিএনপি। বেলা সাড়ে ১১টা থেকে পৌনে ১টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।
সমাবেশ শেষে কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিএনপি বগুড়া শহরে মিছিল বের করে। তবে এই মিছিলে পুলিশ বাধা দিয়েছে। মিছিলটি নিয়ে নেতা-কর্মীরা যখন শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথায় যাচ্ছিলেন, তখন পুলিশ এসে বাধা দেয়। বাধ্য হয়ে মিছিলটি শহরের নওয়াববাড়ী সড়কে দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়।
দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সাত বছর ধরে বগুড়ায় বিএনপির কর্মসূচি শহরের নওয়াববাড়ী সড়কে আটকা ছিল। নানা সময়ে বিএনপি শহরের নওয়াববাড়ী কার্যালয়ের বাইরে আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে সমাবেশ করতে চাইলেও পুলিশের বাধায় ব্যর্থ হয়। ২০১৫ সালের পর আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে বিএনপি কোনো সমাবেশ করতে পারেনি। ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি বিএনপি ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ কর্মসূচিকে সামনে রেখে বগুড়া শহরের আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে সমাবেশ ডেকেছিল। পরে একই দিন ‘গণতন্ত্র রক্ষা দিবস’ নামে পাল্টা সমাবেশ ডেকেছিল জেলা আওয়ামী লীগ। উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে প্রশাসন আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে ১৪৪ ধারা জারি করে সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। এরপর এই খেলার মাঠে আর কোনো সমাবেশ করার অনুমতি দেয়নি পুলিশ।
নানা সময়ে বিএনপি শহরের নওয়াববাড়ী কার্যালয়ের বাইরে আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে সমাবেশ করতে চাইলেও পুলিশের বাধায় ব্যর্থ হয়।
নেতা-কর্মীরা জানান, সব শেষ গত ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে নেতা-কর্মীরা জেলা বিএনপির পূর্বনির্ধারিত সমাবেশের জন্য সমবেত হন। পরে পুলিশ বাধা দিয়ে সমাবেশ পণ্ড করে দেয়। মাঠে সমাবেশ করতে না পেরে পরে ওই দিন শহরে শোভাযাত্রা করে বিএনপির নেতা-কর্মীরা।
দলীয় সূত্র জানায়, আজ কেন্দ্রঘোষিত গণমিছিল কর্মসূচি উপলক্ষে জেলা বিএনপি শহরের আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে সমাবেশ করে। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে সমবেত হয়। বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সমাবেশ শুরু হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি ও বগুড়া পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম বাদশা এবং সঞ্চালনা করেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমান উল্লাহ আমান বলেন, এই বগুড়া থেকে ১০ দফা আন্দোলনের যুগপৎ কর্মসূচি শুরু হলো। এরপর ৩০ ডিসেম্বর ঢাকায় গণমিছিল থেকে সরকার পতনের একদফা আন্দোলনের নতুন যুগপৎ কর্মসূচি আসবে। সেই কর্মসূচি থেকে ‘ভোট চোর’ সরকারকে বিদায় করা হবে। শেখ হাসিনাকে পদত্যাগে জনগণ বাধ্য করবে। পদত্যাগ না করলে জনগণ শেখ হাসিনাকে গণভবন থেকে টেনে নামাবে। বিএনপির এমপিরা অবৈধ সংসদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। এই অবৈধ সংসদে আওয়ামী লীগের কোনো এমপি থাকতে পারবেন না। তাঁরা পদত্যাগ না করলে সংসদ থেকে টেনে নামাবে। মন্ত্রীদের সচিবালয় থেকে টেনে নামাবে।
আমান উল্লাহ আমান বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে খালেদা জিয়া মুক্ত হবেন। তারেক রহমান নির্বাচনে অংশ নেবেন। সেই নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে খালেদা জিয়ার সরকার দেশ পরিচালনা করবেন।