জমি অধিগ্রহণে বসতিশূন্য ২১ গ্রাম, ওয়ার্ড পুনর্বিন্যাসের দাবি জনপ্রতিনিধিদের

পটুয়াখালী জেলার মানচিত্র

পায়রা সমুদ্রবন্দর ও তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য জমি অধিগ্রহণের কারণে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া ও ধানখালী ইউনিয়নের ২১টি গ্রাম বসতিশূন্য হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় ওই ইউনিয়ন দুটির কয়েকটি ওয়ার্ড পুনর্বিন্যাস করার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানেরা।

লালুয়া ইউপির চেয়ারম্যান শওকত হোসেন বিশ্বাস জানান, তাঁর ইউনিয়নের পশুরবুনিয়া, বানাতিপাড়া, হাওলা, ধঞ্জুপাড়া, চৌধুরীপাড়া, নয়াকাটা, মুন্সীপাড়া, বড় পাঁচ নম্বর, ছোট পাঁচ নম্বর, নাওয়াপাড়া, মঞ্জুপাড়া, চর চান্দুপাড়সহ ১৩ গ্রাম জনবসতিশূন্য হয়ে গেছে। এ ছাড়া চান্দুপাড়া, হাচনাপাড়া, কলাউপাড়া, মহল্লাপাড়া, গোলবুনিয়া গ্রামের আংশিকভাবে জনবসতিশূন্য হয়ে পড়েছে।

জনবসতিশূন্য হওয়ার কারণ উল্লেখ করে ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, পায়রা সমুদ্রবন্দরের জন্য লালুয়া ইউনিয়নের ৪ হাজার ৬০০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এতে ৭ হাজার পরিবারকে বসতবাড়ি ছাড়তে হয়েছে। জমিসহ বসতভিটা অধিগ্রহণ করায় ওই এলাকার মানুষ পুনর্বাসনের আওতায় একই ইউনিয়নের অন্য গ্রামে চলে গেছেন। অর্থাৎ, এলাকাবাসীর ঠিকানা পাল্টে গেছে। এখন শুধু কাগজে-কলমেই আছে গ্রামগুলোর নাম। জনবসতিশূন্য হওয়ায় ইউনিয়নের আয়তন কমে গেছে অর্ধেকেরও বেশি। অনেক ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যের নির্বাচনী এলাকায় কোনো বসতি নেই।

একই অবস্থা উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নেরও। ওই ইউনিয়নের নিশানবাড়িয়া, গন্ডামারি, মধুপাড়া, চরনিশানবাড়িয়া, মাছুয়াখালী, ধানখালী, লোন্দা ও পাঁচজুনিয়া গ্রামে এখন কোনো জনবসতি নেই।

ধানখালী ইউপির চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন তালুকদার জানান, তাঁর ইউনিয়নের ৩ হাজার ২০০ একর কৃষিজমি তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প ও পায়রা বন্দরের জন্য অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এ জন্য তাঁর ইউনিয়নের ৬, ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড জনবসতিশূন্য। এ ছাড়া ২, ৩, ৪ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডও আংশিকভাবে বসতি কমে গেছে। ফলে ইউনিয়নের ওয়ার্ডগুলো পুনর্বিন্যাস করা প্রয়োজন। অন্যথায় নির্বাচনের সময়ে এ নিয়ে সমস্যা দেখা দেবে। গ্রামগুলো বিলুপ্ত হওয়ায় ওই এলাকার ইউপি সদস্যরা বিপাকে পড়েছেন।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ইউনিয়ন দুটির ইউপি চেয়ারম্যানেরা নতুন করে ওয়ার্ডগুলো পুনর্বিন্যাসের জন্য উপজেলা পরিষদের সমন্বয় সভায় দাবি করেছেন। তাঁরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে কার্যবিবরণীতে লিপিবদ্ধ করেছেন। কাজটি প্রক্রিয়াধীন বলে তিনি জানান।