সাড়ে ৪ মাস পর বরিশালে করোনায় এক তরুণের মৃত্যু

করোনাভাইরাস
প্রতীকী ছবি

বরিশাল শের-ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে দীর্ঘ সাড়ে চার মাস পর করোনায় আক্রান্ত এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) এস এম মনিরুজ্জামান প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মৃত ব্যক্তির নাম মো. বাবুল (২৫)। তাঁর বাড়ি ভোলার সদর উপজেলায়। এর আগে সর্বশেষ গত ৫ মার্চ গৌরনদী উপজেলার ৭৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ১৪ জুলাই বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের আরটিপিসিআর ল্যাব থেকে পাওয়া প্রতিবেদনে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হন বাবুল। এরপর তীব্র শ্বাসকষ্ট নিয়ে ১৬ জুলাই তিনি ওই হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি হন।

দীর্ঘ সাড়ে চার মাস পর এই ওয়ার্ডে করোনায় আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে হাসপাতালে করোনা ওয়ার্ডে সরাসরি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪৪০ জন। এ ছাড়া উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ৩৭ জন। এর মধ্যে ১৪ জনের করোনা পরীক্ষার প্রতিবেদন অপেক্ষমাণ।

স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগে ১৩৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ১১ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। গত এপ্রিল ও মে মাসে বিভাগের করোনার সংক্রমণ তলানিতে নামলেও জুনের শেষ দিকে এসে তা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছিল। জুলাইয়ের প্রথম তিন দিন সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পেয়েছিল। ১ জুলাই এ বিভাগে সংক্রমণের হার হঠাৎ করে চূড়ায় পৌঁছায় এবং হার দাঁড়ায় ৫৯ দশমিক ১৭ শতাংশ। এরপর ৩ জুলাই তা ছিল ৩৭ দশমিক ৪২ শতাংশ। এরপর কমতে থাকে।

তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, জুন মাসে বিভাগে ৩৭৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল। চলতি মাসে আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত ১৯৫ জন রোগী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ১ থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত বিভাগে শনাক্তের হার ছিল শূন্য। ১৪ জুন একজনের করোনা শনাক্ত হয়। এরপর তা ক্রমেই বাড়তে থাকে। ১ জুলাই সংক্রমণের হার এক লাফে ৫৯ দশমিক ১৭ শতাংশে পৌঁছায়। ৩ জুলাইয়ের পর তা আবার কমতে থাকে। তবে এ ক্ষেত্রে নমুনা পরীক্ষায় অনীহার কারণে করোনা শনাক্তের হার নিচে বলে মনে করছে স্বাস্থ্য বিভাগের একটি সূত্র।

বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, ‘সংক্রমণ পরিস্থিতি জুনের শেষ থেকে ওঠা–নামা করছে। এখন ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি-কাশি দেখা দিচ্ছে। কিন্তু অনেকেই করোনা পরীক্ষা করানোর ব্যাপারে অনাগ্রহ দেখাচ্ছেন। এটা পরিস্থিতি জটিল করতে পারে। এ জন্য আমরা স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশনা দিয়েছি, যাতে কোনো রোগীর মধ্যে এ রকম উপসর্গ থাকলে করোনা পরীক্ষা করানো হয়।’