মেহেরপুরে খাদ্যে বিষক্রিয়ায় এক পরিবারের ৫ জন অসুস্থ, একজনের মৃত্যু

মেহেরপুর জেলার মানচিত্র

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় খাদ্যে বিষক্রিয়ায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে একই পরিবারের পাঁচ সদস্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে মোমিনুর ইসলাম (৬০) নামের একজন মারা গেছেন। গতকাল মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাঁর মৃত্যু হয়।

হাসপাতালের চিকিৎসক বলেছেন, খাদ্যে বিষক্রিয়ায় সবাই হাসপাতালে ভর্তি হলেও মোমিনুর মারা গেছেন হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে। তবে মৃত ব্যক্তির স্বজনেরা অভিযোগ করেছেন, হাসপাতালে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা না পেয়ে মারা গেছেন তিনি।

মোমিনুর ইসলাম গাংনী উপজেলার শালদহ গ্রামের মৃত তেঁতুল মণ্ডলের ছেলে। তাঁর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত সোমবার রাতে মোমিনুরসহ ওই পরিবারের সবাই মাছ ও মাংস দিয়ে ভাত খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। মঙ্গলবার ভোরে মোমিনুর (৬০), তাঁর স্ত্রী ছায়েরা বানু (৫৫), ছেলে শামীম রেজা (৩৮), শামীমের স্ত্রী মমতাজ পারভীন (৩২) ও তাঁর শিশুপুত্র গালিব (৬) গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরিবারের অন্য সদস্যরা সকাল সাড়ে সাতটার দিকে তাঁদের গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল রাতে মোমিনুর ইসলামের মৃত্যু হয়।

গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা মারুফ আহম্মেদ বলেন, ভর্তি হওয়া চারজন গুরুতর অসুস্থ ছিলেন। তাঁদের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে। বাকি তিনজনকে পরিবারের লোকজন এই হাসপাতাল থেকে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেছেন।

খাবারে বিষক্রিয়ায় অসুস্থ মমতাজ খাতুনের ভাবি গাংনী উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারহানা ইয়াসমিন বলেন, রোগীর অবস্থা খারাপ হলেও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা না পেয়ে মোমিনুর ইসলাম মারা গেছেন। তবে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়া চার রোগীর শারীরিক অবস্থা এখন বেশ ভালো।

তবে অবহেলার বিষয়টি সঠিক নয় দাবি করেন গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মারুফ আহম্মেদ। তিনি বলেন, সারা দিন রোগীদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হয়েছিল। সন্ধ্যার দিকে মোমিনুর ইসলামের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ইসিজি করানো হয়। এতে তাঁর হার্টের সমস্যা ধরা পড়ে। তখন পরিবারের লোকজনকে কুষ্টিয়া মেডিকেলে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। পাঠানোর এই প্রক্রিয়ার মধ্যেই মোমিনুর ইসলামের মৃত্যু হয়।

আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে মোমিনুর ইসলামকে এলাকার কবরস্থানে দাফন করা হয়। মোমিনুরের মা খাদিমন্নেসা বলেন, ‘রাইতি পরিবারের সকলে মাছ–ভাত খাইয়ি ঘুমিয়ে পড়ি। সকলে ওঠি দেখছি সবাই পেটে হাত দি বসি আছি। আমাকে বাড়িতি রাইখি সবাই গাংনী হাসপাতালে গি ভর্তি হইলু। এরপর রাইতে আমার ছেইলি মরি গেল।’