বিক্রি হচ্ছে না টিসিবির পণ্য, নেতাদের বিরুদ্ধে ‘কার্ড বাতিল’ করার অভিযোগ

টিসিবির পণ্য বিক্রির দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নারীরা। আজ বুধবার সকালে বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন রাজশাহী শাখা কার্যালয়েছবি: প্রথম আলো

রাজশাহী মহানগরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে দুই মাস ধরে টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে না। ওয়ার্ডের প্রায় আড়াই হাজার টিসিবি কার্ডধারী সুবিধাভোগী ন্যায্যমূল্যে এখন আর চাল–ডাল পাচ্ছেন না। টিসিবির পণ্য সরবরাহের দাবিতে আজ বুধবার এলাকার কয়েকজন নারী সংবাদ সম্মেলন করেছেন।

সকালে বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের রাজশাহী শাখা কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ সময় নারীরা জানান, ওয়ার্ডের স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াতের নেতারা তাঁদের কার্ড বাতিল বলে ঘোষণা দিয়েছেন। তাঁরা রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে কাউন্সিলরের কার্যালয় নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন এবং টিসিবির পণ্য বিক্রি করতে দিচ্ছেন না।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আজ টিসিবির পণ্য বিক্রির কথা ছিল। ওয়ার্ডের চার ডিলার পণ্য বিক্রির জন্য পুলিশ-প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা ও সহযোগিতার আবেদন করেছিলেন। কিন্তু কোনো ডিলারকেই পণ্য বিক্রয় করতে দেওয়া হয়নি। তাঁরা দ্রুত কার্ডধারীদের মধ্যে টিসিবির পণ্য বিক্রি করার দাবি জানান।

টিসিবির পণ্য বিক্রি না করার ব্যাপারে জানতে চাইলে সিটি করপোরেশনের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সচিব সামশুল ইসলাম বলেন, ‘এখানে বিএনপি-জামায়াতের দুটি গ্রুপ রয়েছে। সাবেক কাউন্সিলরেরও একটা গ্রুপ আছে। একটা পক্ষ শুধু চায়, পণ্য বিক্রি করা হোক। অন্যরা সেটা চায় না। তাঁরা নতুন কার্ড করার পক্ষে, এ অবস্থায় পণ্য বিক্রি করতে গেলে মারামারি লেগে যাবে।’

সামশুল ইসলাম আরও বলেন, ‘টিসিবির পণ্যকে কেন্দ্র করে আগের সচিব বদলি হয়েছেন। আমি ডিসেম্বরের ৯ তারিখে যোগ দিয়েছি। আমি পরিস্থিতির শিকার। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা ছাড়া সিদ্ধান্ত নিতে পারব না।’

আরও পড়ুন

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নগরের ৩ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতের আমির মনিরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, সিটি করপোরেশন থেকে একটা নতুন তালিকা চেয়েছিল, যাতে বাদ পড়া কোনো লোক থাকলে সংশোধিত তালিকায় তাঁরা অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন। তাঁরা একটা তালিকা সবাই মিলে করেছিলেন। পরে সিটি করপোরেশন বলছে, এভাবে হবে না; নতুন নির্বাচিত কাউন্সিলর যে তালিকা দেবেন, সেই তালিকা অনুযায়ী পণ্য দেওয়া হবে। তারপর তাঁরা এ ব্যাপারে আর কোনো উদ্যোগ নেননি। আগের তালিকা অনুযায়ী পণ্য দিলে তাঁদের কোনো আপত্তি নেই।

এ বিষয়ে জানতে আজ মহানগর বিএনপির সদস্য তাজউদ্দীনের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে এর আগে তিনি বলেছিলেন, আওয়ামী লীগের নেতা কামাল হোসেন কাউন্সিলর থাকাকালে টিসিবির কার্ড দলীয়করণ করেছিলেন। এখন যেহেতু আওয়ামী লীগ নেই, তাই তাঁরা তালিকা হালনাগাদ করার উদ্যোগ নিয়েছেন। বিএনপি-জামায়াতের সবাই মিলেই কাজটা করছেন। তবে কারও বাড়ি থেকে টিসিবির কার্ড কেড়ে আনছেন না। এসব কার্ড এমনিতেই বাতিল হয়ে যাবে। তাঁরা শুধু বাড়ি বাড়ি তথ্য নিচ্ছেন।
তাজউদ্দীনের দাবি, টিসিবির কার্ড বাতিলের দাবি নিয়ে তাঁরা সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে গিয়েছিলেন। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তাঁকে আহ্বায়ক কমিটি করে একটি চিঠি দিয়েছেন। ছয় সদস্যের এই কমিটি এখন কার্ড হালনাগাদ করার কাজ করছে। তাদের কাজ এখনো শেষ হয়নি।