সৈয়দপুর রেলস্টেশনে বুকিং সহকারীর বিরুদ্ধে নারী যাত্রীকে মারধরের অভিযোগ

সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশন
ফাইল ছবি

নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনে আন্তনগর নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট কিনতে এসে বুকিং সহকারীর হাতে এক নারী যাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন হেনস্তার শিকার ওই নারী। এতে স্টেশনের বুকিং সহকারীসহ চারজন কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।

অভিযোগ দায়েরকারী নারীর নাম রাবেয়া আকতার (৩০)। তিনি সৈয়দপুর শহরের হাতিখানা মহল্লার বাসিন্দা নাসিম হোসেনের মেয়ে। তিনি ঢাকায় রেলওয়ের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সন্ধ্যায় রাবেয়া আকতার চিলাহাটি থেকে ঢাকাগামী আন্তনগর নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনের ১ অক্টোবরের আগাম টিকিটের জন্য স্টেশনে যান। এ সময় রেলওয়ে স্টেশনের কাউন্টারে কর্তব্যরত বুকিং সহকারী জাহেদুল ইসলাম ওরফে রনি জানান, ওই তারিখের কোনো টিকিট নেই। তবে তিনি ওই নারী যাত্রীকে টিকিট পেতে সৈয়দপুর প্লাজার গ্লোবাল কম্পিউটার অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার নামে কালোবাজারে টিকিট বিক্রির দোকানে যেতে বলেন। সেখানে ৬টি টিকিটের মূল্য হিসেবে গ্লোবাল কম্পিউটারের মালিক মনোয়ার হোসেন ওই নারী যাত্রীর কাছে ৩ হাজার ২০০ টাকা নিয়ে একটি স্লিপ দিয়ে পুনরায় রেলওয়ে স্টেশনের বুকিং সহকারীর কাছে পাঠান।

রেলের কর্মচারীসহ চারজন মিলে ওই নারীকে দেয়ালের সঙ্গে মাথা চেপে ধরে চড়-থাপ্পড় মারতে থাকেন। একপর্যায়ে তাঁর কেনা টিকিট ও তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন কেড়ে নেন তাঁরা।

রাবেয়া আকতার জানান, বুকিং সহকারী জাহেদুলকে ওই স্লিপ দেওয়ার পর তাঁকে দেড় হাজার টাকা মূল্যের আক্কেলপুর থেকে ঢাকা পর্যন্ত ৪টি টিকিট (আসন ‘ছ’ কোচের ৮৬, ৯০, ৯১ ও ৯২) এবং ৩০০ টাকা মূল্যের পার্বতীপুর থেকে জয়পুরহাট পর্যন্ত ২টি টিকিট (আসন ‘ছ’ কোচের ৫২ ও ৫৬) দেন। এ সময় সৈয়দপুর স্টেশন থেকে ঢাকা পর্যন্ত টিকিট কেন দিলেন না এবং ১ হাজার ৮০০ টাকার টিকিটের মূল্যের স্থলে ৩ হাজার ২০০ টাকা নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে বুকিং সহকারী জাহেদুল ক্ষিপ্ত হয়ে ওই নারীকে  অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এ সময় রেলের আরও দুজন কর্মচারী মিলে ওই নারী যাত্রীকে টেনে-হিঁচড়ে বুকিং সহকারীর কক্ষে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখেন। পরে রেলের কর্মচারীসহ চারজন মিলে ওই নারীকে দেয়ালের সঙ্গে মাথা চেপে ধরে চড়-থাপ্পড় মারতে থাকেন। একপর্যায়ে তাঁর কেনা টিকিট ও তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন কেড়ে নেন অভিযুক্ত ব্যক্তিরা।

সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনের প্রধান বুকিং সহকারী মাহবুবুর রহমান বলেন, নারী ট্রেনযাত্রীকে লাঞ্ছিত করার ঘটনা সত্য নয়। ওই নারী শহরের অন্য কোনো স্থান থেকে চিরকুট বা টিকিট সংগ্রহ করেছেন কি না বা কত টাকার বিনিময়ে টিকিট নিয়েছেন, তা তাঁদের জানা নেই। তবে স্টেশনের বুকিং থেকে তাঁর টিকিট প্রিন্ট করে দেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি।

সৈয়দপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিউল ইসলাম বলেন, স্টেশনে টিকিট কিনতে গিয়ে লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় বুকিং সহকারী জাহেদুল ইসলামের বিরুদ্ধে রাবেয়া আকতার নামের একজন নারী লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগে রেলওয়ের অজ্ঞাত আরও কয়েকজন কর্মচারীর কথা উল্লেখ করা রয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।