প্রকাশ্যে বৃদ্ধকে কোপানোর ভিডিও ভাইরাল, তিনজনকে আসামি করে মামলা

আহত ওমেদ আলীকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে
ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরে এক বৃদ্ধকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে তাঁর শ্যালক ও শ্যালকের ছেলে জখম করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাঁকে কোপানোর সময় আশপাশের লোকজন চিৎকার, চেঁচামেচি করলেও কেউ এগিয়ে আসেননি। তাঁকে কোপানোর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সোমবার সকাল থেকে ছড়িয়ে পড়ে।

ঘটনাটি ঘটেছে গাজীপুর মহানগরীর ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের নাগা এলাকায় গত রোববার বিকেলে। আহত বৃদ্ধ হলেন গাজীপুর মহানগরীর নাগা এলাকার ওমেদ আলী (৬৫)। তিনি বর্তমানে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, একটি পতিত জমিতে ওমেদ আলীকে প্রথমে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়। তাতে এক ব্যক্তি (ওমেদ আলীর শ্যালক সাদিক) তাঁকে মারধর শুরু করেন। এ সময় শ্যালক সাদিকের ছেলে সাদ্দাম হোসেন ধারালো দা দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে কোপাতে থাকেন। কয়েকজন নারী চিৎকার-চেঁচামেচি করলেও কেউ বাধা দিতে এগিয়ে আসেননি। একপর্যায়ে ওই বৃদ্ধ সংজ্ঞাহীন অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।

আহত ওমেদ আলীর মেয়ে ওহিদা খাতুন বলেন, ‘আমার বাবা বৃদ্ধ মানুষ। মসজিদের পাশে একটি পতিত জমিতে সবজি লাগিয়ে দেখাশোনা করেন। কিন্তু রেবেকা নামের আমাদের আত্মীয় তাঁর গরু ওই সবজির জমিতে দিয়ে যান। গরু দিতে মানা করায় তিনি ঝগড়া শুরু করেন। পরে আব্বা বাধা দিলে সাদিক এসে বাবাকে লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকেন। পরে তাঁর ছেলে সাদ্দাম গিয়ে বাবাকে দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপান। পরে তাঁকে উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।’

এ ঘটনার পর ওমেদ আলীর মেয়ে ওহিদা খাতুন বাদী হয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন সদর থানায় তিনজনকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন। মামলার আসামি হলেন বৃদ্ধের শ্যালক সাহিদ হোসেন, তাঁর স্ত্রী রেবেকা বেগম ও তাঁদের ছেলে সাদ্দাম হোসেন।
পুলিশ ও স্থানীয় মানুষেরা জানান, পারিবারিক বিষয় নিয়ে তাঁদের দুই পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এসবের জের ধরে রোববার তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই বৃদ্ধকে কুপিয়ে জখম করেছেন প্রতিপক্ষের লোকেরা। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে কৌশলে আসামিরা নিজেরাই তাঁদের হাত-পা কেটে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে তাঁদের ওই হাসপাতালে পুলিশি পাহারায় রাখা হয়েছে। সুস্থ হলে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হবে।

শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি মামলার আসামি সাহিদ হোসেন বলেন, ‘আমাকেও সে (ওমেদ আলী) পিটিয়েছে, আমার বউকেও মেরেছে। পরে আমার ছেলে রেগে গিয়ে তার ওপর আক্রমণ করেছে। আমার দুলাভাই লোক ভালো না। সে নেশাপানি খায়। বোনের সঙ্গেও সম্পর্ক ভালো না। আমি হাসপাতাল থেকে গিয়ে আমিও মামলা করব।’

গাজীপুর সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ওই ঘটনার পর একটি মামলা হয়েছে। মামলার একজন আসামি হাসপাতালে পুলিশি পাহারায় রয়েছেন। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।