কীর্তিনাশায় হঠাৎ ভাঙন, ধসে পড়েছে ১০০ মিটার 

পাঁচটি পরিবারের বসতঘরের পাশের মাটি নদীতে ধসে পড়েছে। সেখানে আরও ২৫টি পরিবারের বসবাস।

শরীয়তপুর পৌরসভার চরপাতানিধি এলাকায় কীর্তিনাশা নদীতে ভাঙন। হুমকিতে পড়েছে বসতবাড়ি
ছবি: প্রথম আলো

শরীয়তপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের চরপাতানিধি এলাকায় কীর্তিনাশা নদীর কিছু অংশে ভাঙন দেখা দিয়েছে। রাজগঞ্জ-আড়িগাঁও সড়কে নদীর ওই অংশে গত বুধবার রাতে ১০০ মিটার ধসে পড়েছে। ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে আশপাশের ৩০টি বসতবাড়ি। ধসে পড়া সেই অংশে ভাঙন ঠেকাতে কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

শরীয়তপুর পাউবো সূত্র জানায়, ২০১৭ সালে রাজগঞ্জ-আড়িগাঁও সড়কটি কীর্তিনাশার ভাঙনের কবলে পড়ে। কয়েক বছরের ভাঙনে চরপাতানিধি এলাকার ৫০০ মিটার সড়ক নদীতে বিলীন হয়ে যায়। পাঁচ বছর যাবৎ ওই স্থান দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। কীর্তিনাশা নদীর বিভিন্ন অংশে ভাঙন থাকায় নড়িয়া থেকে মাদারীপুরের রাজারচর পর্যন্ত নদীর তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয় পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়। ২০২১ সালে ২২টি স্থানে ১২ কিলোমিটার এলাকায় নদীর তীর রক্ষা বাঁধ দেওয়ার জন্য ৩১৯ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন দেয় সরকার।

ওই প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে শরীয়তপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের চরপাতানিধি এলাকার ৫০০ মিটার অংশ। ওই অংশের ঠিকাদার আমীর ইঞ্জিনিয়ারিং নামের একটি প্রতিষ্ঠান। গত বছরের মার্চে তারা প্রকল্পটিতে কাজ করার কার্যাদেশ পায়। সেখানে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। আর সড়কটি চওড়া করার জন্য বালু ফেলা হচ্ছে। তার মধ্যে বুধবার রাতে চরপাতানিধি এলাকায় হঠাৎ ১০০ মিটার এলাকা নদীতে ধসে পড়েছে।

গতকাল দুপুরে চরপাতানিধি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পাঁচটি পরিবারের বসতঘরের পাশের মাটি নদীতে ধসে পড়েছে। সেখানে আরও ২৫টি পরিবারের বসবাস। সেখানে গভীর খাদের সৃষ্টি হয়েছে। ঘরগুলোর দেয়াল ও মেঝেতে ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। ওই স্থানে ভাঙন ঠেকাতে পাউবোর শ্রমিকেরা ব্লক ফেলছেন।

চরপাতানিধি এলাকার লিটন তালুকদারের বাড়িটি নদীর তীরঘেঁষা। ভাঙনে এর আগে তাঁদের বসতবাড়ির একটি অংশ বিলীন হয়েছে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘বুধবার রাতে হঠাৎ শব্দ করে মাটি ধসে পড়েছে নদীতে। আমরা আতঙ্কে ঘর থেকে বের হয়ে যাই। ভয়ে সারা রাত ঘুমাতে পারিনি। দ্রুত ভাঙন রোধের কাজটি শেষ করা না হলে আমাদের সব নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।’

শরীয়তপুর সদরের ব্যবসায়ী রফিকুল তালুকদারের বসতঘরের পেছনের অংশ নদীতে বিলীন হয়েছে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার পাকা ঘরের মাটি নদীতে বিলীন হয়েছে। আতঙ্কে আছি, কখন পুরো ঘরটিসহ বসতবাড়ি বিলীন হয়ে যায়।’

এ ব্যাপারে পাউবোর শরীয়তপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবীব প্রথম আলোকে বলেন, কীর্তিনাশা নদীর তীর রক্ষা বাঁধ প্রকল্পের একটি অংশের কাজ চলছে চরপাতানিধি এলাকায়। সেখানে বালু ফেলে রাস্তা চওড়া করা হচ্ছিল। বালুসহ ওই প্রকল্পের ১০০ মিটার অংশ হঠাৎ ধসে পড়েছে। আতঙ্ক ও ভয়ের কিছু নেই। ওই স্থান ঝুঁকিমুক্ত করার কাজ চলছে।