জয়পুরহাটে ইউপি সদস্যের ব্যক্তিগত কার্যালয় থেকে ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
জয়পুরহাটে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক সদস্যের ব্যক্তিগত কার্যালয় থেকে এক ব্যক্তির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে আক্কেলপুর উপজেলার কাশিড়া বাজার এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে আক্কেলপুর উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সেলিম হোসেনের ব্যক্তিগত কার্যালয় থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত ওই ব্যক্তির নাম সুজন মণ্ডল (৩৫)। তিনি কাশিড়া পুকুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি মাইক্রোবাসচালক ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে মাদক সেবন ও চুরির অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রের ভাষ্য, গতকাল বুধবার বিকেলে সুজন মণ্ডল ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পাকুরদাড়িয়া গ্রামে তাঁর খালাতো বোন সোনাভানের বাড়ির দরজা ভেঙে ৭০ হাজার টাকা চুরি করে পালিয়ে যান। সন্ধ্যার দিকে ইউপি সদস্য সেলিম হোসেনের সহায়তায় তাঁকে ওই গ্রামে ধরে আনা হয়। সেখানে মারধরের এক পর্যায়ে সুজন টাকা চুরির কথা স্বীকার করেন। সেলিম হোসেন সেখান থেকে সুজনকে নিয়ে কাশিড়া বাজারে তাঁর ব্যক্তিগত কার্যালয়ে আসেন। সেখানে তিনি ও তাঁর সহযোগীরা আবারও তাঁকে মারধর করেন। এতে সুজন গুরুতর আহত হন।
পুলিশ জানায়, সেলিম হোসেন দুজন গ্রাম পুলিশ দিয়ে তাঁর ব্যক্তিগত কার্যালয়ে সুজনকে আটকে রাখেন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল আটটার দিকে সুজন সেখান থেকে তাঁর স্ত্রী মারুফা আকতারের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলেন। এরপর পাহারার দায়িত্বে থাকা গ্রাম পুলিশরা সুজনের আত্মহত্যার খবর দেন। খবর পেয়ে স্বজন ও স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে এসে তাঁর ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান।
সুজন মণ্ডলের স্ত্রী মারুফা আকতার বলেন, ‘টাকা চুরির অভিযোগে বুধবার সন্ধ্যায় ইউপি সদস্য সেলিম তাঁর ব্যক্তিগত কার্যালয়ে আমার স্বামীকে ডেকে এনে রাতভর লাঠিপেটা করেছেন। তিনি ও তাঁর সহযোগীদের মারধরে আমার স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি আড়াল করতে আমার স্বামীর আত্মহত্যার নাটক সাজানো হয়েছে।’
মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি সদস্য সেলিম হোসেন বলেন, ‘সুজন টাকা চুরি করেছিলেন। পাকুরদাড়িয়া গ্রামের লোকজন তাঁকে মারধর করেছে। সেখান থেকে সুজনকে আমার কার্যালয়ে এনে রাত ১০টার পর থানায় খবর দিয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ না আসায় দুজন গ্রাম পুলিশ পাহারায় রেখে বাড়িতে চলে এসেছি। তারা রাতে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গেলে সুজন আত্মহত্যা করেন।’
গোপীনাথপুর ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, ‘সেলিম হোসেন তাঁর ব্যক্তিগত কার্যালয়ে একজনকে আটকে রেখেছেন, সেটি আমাকে জানানো হয়নি। ইউপি সদস্য কাউকে আটকে রাখতে পারেন না।’
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিন রেজা বলেন, সুজনের মাথায় ব্যান্ডেজ ও শরীরের পেছনে কালশিটে দাগ রয়েছে। তাঁকে মারধর করা হয়েছে। লাশটি উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করছে।