খুলনা-মোংলা রেলপথে পরীক্ষামূলকভাবে চলল ট্রেন, উদ্বোধন ১ নভেম্বর

খুলনা-মোংলা রেললাইন উদ্বোধনের অপেক্ষায়। খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলায় ৪ অক্টোবর
ছবি: প্রথম আলো

খুলনা-মোংলা রেলপথে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। সোমবার বিকেল চারটার দিকে রেলের একটি ইঞ্জিন কয়েকটি বগি নিয়ে খুলনার ফুলতলা থেকে মোংলার উদ্দেশে যাত্রা করে। আগামী ১ নভেম্বর ওই রেলপথ প্রকল্পের উদ্বোধন করা হবে।

খুলনা-মোংলা রেলপথ প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী আহমেদ হোসাইন সন্ধ্যা ছয়টার দিকে মুঠোফোনে বলেন, খুলনা-মোংলা রেলপথটি এখন পরীক্ষামূলকভাবে রেল চলাচলের উপযোগী হয়েছে। চারটার দিকে ট্রেনটি মোংলার উদ্দেশে ছেড়ে এসেছে। আগামী ১ নভেম্বর সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভার্চ্যুয়ালি আনুষ্ঠানিকভাবে এই রেলপথ উদ্বোধন করবেন। এ জন্য খুলনায় বিশেষ কোনো আয়োজন করা হচ্ছে না।

প্রকল্পের সহকারী প্রকৌশলী রফিকুল হক জানান, রোববার মোটর ট্রলিতে করে মাইকিং করে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চলাচলের বিষয়টি রেলপথের দুই পাশের লোকজনকে অবহিত করা হয়, যাতে লোকজন সচেতন হতে পারে ও দুর্ঘটনা না ঘটে।

প্রকল্পের কর্মকর্তারা বলেন, ট্রানজিট সুবিধার আওতায় ভারত, নেপাল ও ভুটানে পণ্য পরিবহন সহজ করতে ২০১০ সালে খুলনার ফুলতলা রেলস্টেশন থেকে মোংলা বন্দর পর্যন্ত রেলপথ স্থাপন প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। প্রকল্পটি তিন বছরে শেষ হওয়ার কথা ছিল। এরপর পেরিয়ে গেছে ১৩ বছর। মেয়াদ বাড়ার সঙ্গে বেড়েছে প্রকল্পের ব্যয়ও। শুরুতে প্রকল্পের ব্যয় ১ হাজার ৭২১ কোটি টাকা থাকলেও কয়েক দফায় মেয়াদ বেড়ে বর্তমানে ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ২৬০ কোটি টাকার বেশি। ভারত সরকারের ঋণসহায়তায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লার্সেন অ্যান্ড টার্বো ও ইরকন ইন্টারন্যাশনাল। আগামী ডিসেম্বরে ওই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে।

আরও পড়ুন

প্রকল্প–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, জমি অধিগ্রহণে দেরি হওয়া, যথাসময়ে মালামাল সরবরাহ না হওয়া, রূপসা নদীর ওপর রেলসেতু নির্মাণে দেরি হওয়া, জলপাইগুড়ি থেকে আনা রেললাইনের স্লিপার বাতিল হাওয়া এবং করোনাসহ নানা কারণে প্রকল্পটি শেষ হতে এত সময় নিয়েছে।

প্রকল্প সূত্রে আরও জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় রূপসা নদীর ওপর ৫ দশমিক ১৩ কিলোমিটারের রেলসেতু নির্মাণ করা হয়েছে। তৈরি করা হয়েছে প্রায় ৯০ কিলোমিটার রেলপথ। রেলপথটিতে রয়েছে নয়টি প্ল্যাটফর্ম। ১০৭টি ছোট সেতু ও ৯টি আন্ডারপাসও নির্মাণ করা হয়েছে ওই প্রকল্পের আওতায়। ফুলতলা-মোংলা পর্যন্ত রেলপথ চালু হলে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে যোগাযোগব্যবস্থা উন্নত হবে। মোংলা বন্দর ব্যবহার করে কম খরচে পণ্য আমদানি ও রপ্তানি করার সুযোগ সৃষ্টি হবে।