টাঙ্গাইল শহীদ মিনার চত্বরে বিনা মূল্যে সবার জন্য ইফতার

টাঙ্গাইল শহরের শহীদ মিনার চত্বরে প্রতিদিন ইফতারের আয়োজন করেন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘ত্রিবেণী’ ও বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের এসএসসি–৯২ ব্যাচের শিক্ষার্থীরাছবি: প্রথম আলো

টাঙ্গাইল শহরে রিকশা চালান সাইদুর রহমান। প্রতিদিন কাজ শেষে সন্ধ্যার আগে আগে শহরের নিরালার মোড় এলাকায় আসেন তিনি। সেখান থেকে প্রবেশ করেন শহীদ মিনার চত্বরে। রোজার শুরু থেকে সাইদুরের মতো অনেকের জন্য সেখানে আয়োজন করা হচ্ছে ইফতারের।

সাইদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এখানে প্রতিদিন বিনা মূল্যে ইফতার করানো হয়। এতে দরিদ্র মানুষদের অনেক সুবিধা হয়েছে।

শহরের শহীদ মিনার চত্বরে এই আয়োজন করেছেন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘ত্রিবেণী’ ও বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের এসএসসি–৯২ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। প্রতিদিন তিন শতাধিক মানুষকে বিনা পয়সায় ইফতার করান তাঁরা।

আয়োজকেরা জানান, ২০১৫ সাল থেকে এই দুই সংগঠন মিলে রমজান মাসজুড়ে ইফতারের আয়োজন করছে। মাঝে ২০২০ ও ২০২১ সালে করোনার কারণে আয়োজন বন্ধ ছিল। এখানে সপ্তাহে তিন দিন খিচুড়ি ও মাংস এবং চার দিন ছোলা, মুড়ি, পেঁয়াজু, জিলাপি, ডিম, ফলসহ বিভিন্ন খাবার দিয়ে রোজাদারদের আপ্যায়ন করা হয়। প্রতিদিন শরবতের ব্যবস্থাও করা হয়।

রোববার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, শহীদ মিনারের পুরো এলাকায় ত্রিপল দিয়ে প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে। বিকেল থেকেই আয়োজকেরা প্লেট ও গ্লাস গোছানোর কাজ শুরু করেন। সেখানে ছোলা, পেঁয়াজুসহ ইফতারের বিভিন্ন উপকরণ প্লেটে সাজানো হচ্ছিল। বিকেল সাড়ে পাঁচটার পর থেকেই ইফতার করতে লোকজন আসা শুরু হয়। সন্ধ্যা ছয়টার মধ্যে পূর্ণ হয়ে যায় শহীদ মিনার চত্বর। ইফতার আয়োজনে আসা ব্যক্তিদের মধ্যে বেশির ভাগই দরিদ্র শ্রমজীবী, শিক্ষার্থী, পথচারী ও ছিন্নমূল মানুষ।

ইফতার করতে আসা চমর আলী নামের এক ব্যক্তি বলেন, শহরে এসেছিলেন কাজে। শেষ করতে করতে ইফতারের সময় হয়ে যায়। তখন দেখতে পান এখানে ইফতার করানো হচ্ছে। সে জন্য তিনিও এসে ইফতার করেন।

ভিক্টোরিয়া সড়কের চা দোকানি জমেলা বেগম বলেন, তিনি এখানে প্রতিদিন ইফতার করেন। পাশাপাশি ইফতার আয়োজনে ফল কাটা, প্লেট সাজানোসহ উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন কাজ করে দেন।

ত্রিবেণীর সাবেক সভাপতি বিভূতি ভট্টাচার্য প্রথম আলোকে বলেন, প্রথম থেকে শেষ রোজা পর্যন্ত তাঁদের ইফতারের আয়োজন থাকে। সংগঠনের সদস্যরা চাঁদা দিয়ে এর ব্যয় বহন করেন।

ত্রিবেণীর বর্তমান সভাপতি মোমিনুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন তিন শতাধিক মানুষ এখানে বসে ইফতার করেন। এ ছাড়া এই এলাকায় কর্তব্যরত পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশের ৩০ থেকে ৩৫ সদস্যকে প্যাকেটে ইফতার সরবরাহ করা হয়। এখানে মানুষ তৃপ্তিসহকারে ইফতার করেন বলে জানান তিনি।