সকালে হাসিমুখে স্কুলে গেল শিশুটি, ফিরল লাশ হয়ে

সড়ক দুর্ঘটনা
প্রতীকী ছবি

‘স্কুল ছুটির পর সড়কের এক পাশ দিয়ে হেঁটে বাবারে নিয়ে বাড়ি ফিরতে ছিলাম। মুহূর্তে একটি ইজিবাইক এসে আমার সোনামানিককে ধাক্কা দিয়ে মেরে ফেলে। সকালে বাবায় আমার হাসিমুখে স্কুলে গেল, ফিরে এল লাশ হয়ে।’

বিলাপ করে কথাগুলো বলছিলেন সড়কে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের ধাক্কায় নিহত শিশু আতিক হাসানের (১০) মা রাশেদা বেগম।

শিশুটি স্কুল থেকে মায়ের সঙ্গে হেঁটে বাড়ি ফেরার পথে শনিবার বেলা দেড়টার দিকে বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার আমতলী জোড়া ব্রিজ এলাকায় বগুড়া-সারিয়াকান্দি সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এর প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী বগুড়া-সারিয়াকান্দি সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন।

নিহত আতিক হাসান সারিয়াকান্দি উপজেলার হাটফুলবাড়ি ইসলামিক কিন্ডারগার্টেন স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। সে আমতলী গ্রামের আনারুল ইসলামের ছেলে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, স্কুল ছুটির পর মা রাশেদা বেগমের সঙ্গে হেঁটে বাড়িতে ফিরছিল আতিক। আমতলী জোড়া ব্রিজের কাছে পৌঁছালে সারিয়াকান্দি থেকে আসা একটি ইজিবাইক তাকে ধাক্কা দেয়। এতে সড়কের ওপরে ছিটকে পড়ে আহত হয় আতিক। স্থানীয় ব্যক্তিরা তাকে সারিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে আতিকের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে আমতলী গ্রামের বাসিন্দারা বেলা তিনটা থেকে সাড়ে তিনটা পর্যন্ত বগুড়া-সারিয়াকান্দি সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এতে আধা ঘণ্টা বগুড়া-সারিয়াকান্দি সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে।

গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ, আমতলী জোড়া ব্রিজ এলাকায় আগেও দুর্ঘটনায় প্রাণ ঝরেছে। আজ বেপরোয়া গতির ইজিবাইক শিশু আতিককে চাপা দিয়েছে। ইজিবাইকের চালককে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।

জানতে চাইলে সন্ধ্যায় সারিয়াকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজেশ কুমার চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, দুর্ঘটনার প্রতিবাদে আধা ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। শিশুটির লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ইজিবাইকটি এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পরিবারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত থানায় অভিযোগ করা হয়নি।