সংসদ সদস্যের সামনে আ.লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১০
মাদারীপুরের কালকিনিতে এক সমাবেশে স্থানীয় সংসদ সদস্যের উপস্থিতিতে ককটেল বিস্ফোরণ ও আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে আহত হয়েছেন উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন। এই পরিস্থিতিতে পরে সমাবেশ সংক্ষিপ্ত করা হয়। মঙ্গলবার বিকেলে কালকিনি উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর উচ্চবিদ্যালয় মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
আহত ব্যক্তিদের মধ্যে পাঁচজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তাঁরা হলেন লক্ষ্মীপুর এলাকার অহিদুল ইসলাম (৩৫), আরিফ খান (৩০), নিজাম খান (৪৫), কায়উম সরদার (৪০) ও আরসু সরদার (৫৫)।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে ফসলের উৎপাদন বাড়াতে প্রান্তিক চাষিদের নিয়ে ওই সমাবেশের আয়োজন করা হয়। বিকেলে সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন মাদারীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য আবদুস সোবহান ওরফে গোলাপ।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পিংকি সাহা। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন মাদারীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তরের উপপরিচালক মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, কালকিনি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মীর গোলাম ফারুক, কালকিনি পৌর মেয়র এস এম হানিফ, জেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রুবেল খান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিল্টন বিশ্বাস, লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মৌসুমি হক সুলতানা, কালকিনি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মারগুব তৌহিদ প্রমুখ।
প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিরা আসার পর লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ফজলুল হক ব্যাপারী ও কালকিনি উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন মোল্লাও আসেন। পরে তাঁদের কর্মী-সমর্থকেরা স্লোগান দিতে দিতে কৃষি সমাবেশে আসতে থাকেন। সমাবেশস্থলে আগে প্রবেশ করা নিয়ে এ সময় উভয়ের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে সংসদ সদস্যের উপস্থিতিতেই হাতাহাতি থেকে চেয়ার দিয়েই দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় সমাবেশস্থল ও তার আশপাশে বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে। এতে আহত হন অন্তত ১০ জন। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এ পরিস্থিতিতে দ্রুত সমাবেশ শেষ করা হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন মোল্লা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার প্রতিপক্ষ ফজলুল হক ব্যাপারীর লোকজন অতর্কিতে আমার কর্মীর ওপর হামলা চালিয়েছে। তারাই ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।’
অভিযোগের বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ফজলুল হক ব্যাপারী বলেন, তিনি কিংবা তাঁর লোকজন কোনো ধরনের হামলা কিংবা ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটাননি। তাঁকে রাজনৈতিকভাবে দুষছেন আফজাল ও তাঁর লোকজন।
মাদারীপুরের কালকিনি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মারগুব তৌহিদ বলেন, কৃষি সমাবেশের কিছুটা দূরে ককটেল বিস্ফোরিত হয়। দুই পক্ষের উত্তেজনা দেখা দিলে সাংসদের আশ্বাসে পরিস্থিতি শান্ত হয়। ওই এলাকায় উত্তেজনা থাকায় পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।
এ সম্পর্কে কালকিনি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মীর গোলাম ফারুক বলেন, সমাবেশস্থলে নেতা–কর্মীরা মিছিল নিয়ে আসায় উত্তেজনা দেখা দেয়। মূলত স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে হাতাহাতি হয়। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। কিন্তু সমাবেশের কোনো সমস্যা হয়নি।