যশোরে পুকুর ও বালতির পানিতে ডুবে একই দিনে তিন শিশুর মৃত্যু
যশোরের অভয়নগর ও মনিরামপুর উপজেলায় পুকুরের পানিতে ডুবে এবং বালতির পানিতে পড়ে তিন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার অভয়নগর উপজেলার মাগুরা ও বুইকরা গ্রামে এবং মনিরামপুর উপজেলার ধলিগাতী গ্রামে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
মারা যাওয়া শিশুরা হলো আরিয়ান হোসেন (১ বছর ৫ মাস), রুকসানা খাতুন (১১) এবং আরশি খাতুন (১ বছর ৬ মাস)। আরিয়ান অভয়নগর উপজেলার মাগুরা গ্রামের শামীম হোসেনের ছেলে, রুকসানা একই উপজেলার বুইকরা গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেনের মেয়ে এবং আরশি মনিরামপুর উপজেলার ধলিগাতী গ্রামের ইকবাল হোসেনের মেয়ে।
আরিয়ানের মামি ডলি বেগম জানান, সকালে আরিয়ানকে বাড়িতে রেখে মা রুবিনা বেগম বড় মেয়েকে নিয়ে পাশের বাড়িতে যান। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আরিয়ানকে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি করা হয়। একপর্যায়ে বাড়ির পাশের পুকুরের পানিতে তাকে ভাসমান অবস্থায় পাওয়া যায়। সঙ্গে সঙ্গে পুকুর থেকে উদ্ধার করে তাকে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রুকসানার বাবা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, দুপুরে রুকসানা কয়েক বন্ধুর সঙ্গে বাড়ির পাশের পুকুরে গোসল করছিল। একপর্যায়ে পুকুরের গভীর অংশে রুকসানা তলিয়ে গেলে বন্ধুরা বাড়িতে খবর দেয়। দ্রুত উদ্ধার করে রুকসানাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রায় ৩০ মিনিট পর আসেন এবং রুকসানাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। জাহাঙ্গীর হোসেন অভিযোগ করেন, ‘সঠিক সময় চিকিৎসক উপস্থিত হলে আমার মেয়ের মৃত্যু হতো না। চিকিৎসকের কারণে আমার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে।’
এদিকে রুকসানার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে বিকেলে বুইকরা গ্রাম থেকে লোকজন এসে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘেরাও করেন ও চিকিৎসককে মারধরের চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন।
অভয়নগর থানার ওসি মো. আবদুল আলিম বলেন, উপজেলার মাগুরা গ্রামে এবং বুইকরা গ্রামে দুটি শিশু আজ পানিতে ডুবে মারা গেছে। এ ব্যাপারে থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
মনিরামপুর উপজেলার ধলিগাতী গ্রামের আজহারুল ইসলাম বলেন, তাঁর প্রতিবেশী ইকবাল হোসেনের দেড় বছরের মেয়ে আরশি আজ দুপুর ১২টার দিকে বাড়িতে খেলছিল। বাড়িতে টিউবওয়েলের পাশে বালতিতে আনুমানিক ৮ থেকে ১০ ইঞ্চি পানি রাখা ছিল। একপর্যায়ে শিশুটি উপুড় হয়ে বালতির পানিতে পড়ে যায়। স্বজনেরা শিশুটিকে না পেয়ে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে তাকে বালতির ভেতরে পড়ে থাকতে দেখেন। পরে তাকে উদ্ধার করে মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে আরশির মৃত্যু হয়েছে।
জানতে চাইলে মনিরামপুর থানার ওসি নূর মোহাম্মদ গাজী বলেন, বালতির পানিতে পড়ে শিশুর মৃত্যুর কোনো খবর থানায় আসেনি।