সাগরে নিখোঁজ ছাত্র অরিত্রকে উদ্ধারে অভিযান শুরুর দাবি

কক্সবাজারে নিখোঁজ অরিত্রকে খোঁজার কার্যক্রম পুনরায় চালুর দাবিতে মানববন্ধন। গতকাল বিকেল তিনটায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে তোলাছবি:প্রথম আলো

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের নিখোঁজ সহপাঠী অরিত্র হাসানকে উদ্ধারে পুনরায় অভিযান শুরু করার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার বেলা তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ’–এর ব্যানারে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী প্রায় ৩০ মিনিট মানববন্ধন পালন করেন।

মানববন্ধনে সঞ্চালকের দায়িত্ব পালনকারী বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিন বলেন, পাঁচ মাস আগে হিমছড়ি সৈকতে দুর্ঘটনায় তাঁদের বিভাগের তিন শিক্ষার্থী পানিতে ভেসে যান। তাঁদের মধ্যে দুজনের মরদেহ উদ্ধার হয়, তবে অরিত্র হাসানকে আজও পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, ‘আমাদের দাবির মূল উদ্দেশ্য অরিত্রকে খোঁজার প্রচেষ্টা পুনরায় শুরু করা। আমরা চাই, ভবিষ্যতে কোনো শিক্ষার্থী কোথাও বেড়াতে গেলে যেন যথাযথ পরিকল্পনা ও সতর্কতাসহ যায়।’

অরিত্র ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এবং একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী দেওয়ান ইজাজ ফারহান বলেন, ‘সেদিন আমাদের বন্ধু ঢেউয়ে হারিয়ে গেলেও কিছুদিন তল্লাশি চালানোর পর সেই প্রচেষ্টা বন্ধ হয়ে যায়। আজকের কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা রাষ্ট্রের কাছে দাবি জানাচ্ছি—অরিত্রকে খোঁজার অভিযান আবার শুরু করা হোক।’

চাকসুর এজিএস আয়ুবুর রহমান বলেন, ‘অরিত্র আমাদের শিক্ষার্থী, দেশের নাগরিক। তাঁকে খোঁজার কাজ কিছুদিন চালানো হলেও পরে স্থবির হয়ে যায়। ড্রোনসহ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হলে তাঁকে পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল আরও বেশি। ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীরা যেন নিরাপদে ভ্রমণ করতে পারেন, সে জন্য পর্যটন পুলিশ ও প্রশাসনের তৎপরতা বাড়াতে হবে।’

কর্মসূচিতে সংহতি জানাতে উপস্থিত ছিলেন ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ সোহাইব, সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ ফয়সাল, প্রভাষক গোলাম সরওয়ার এবং চাকসুর সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) আয়ুবুর রহমান।

চলতি বছরের ৮ জুলাই কক্সবাজারের হিমছড়ি সৈকতে গোসল করতে নেমে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের তিন শিক্ষার্থী পানিতে ভেসে গেলে কিছুক্ষণ পর সাদমান রহমানের লাশ উদ্ধার হলেও অরিত্র হাসান (২২) ও আসিফ আহমেদ (২২) নিখোঁজ হন। উত্তাল সাগর, গভীর গুপ্তখাল, পর্যাপ্ত নিরাপত্তাহীনতা এবং ঘটনাস্থলে লাইফগার্ড-নিরাপত্তাকর্মীর ঘাটতি উদ্ধারকাজে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। পরদিন নাজিরারটেক এলাকায় আসিফের লাশ ভেসে উঠলেও পাঁচ মাস পরও অরিত্রকে আজও খুঁজে পাওয়া যায়নি।