গাজীপুরে বেতন–বোনাসের দাবিতে দ্বিতীয় দিনে চলছে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

বেতন ও বোনাসের দাবিতে গাজীপুর নগরের জরুন এলাকায় কেয়া গ্রুপের বিভিন্ন কারাখানার শ্রমিকেরা সড়ক অবরোধ করেন। আজ মঙ্গলবার সকালেছবি: প্রথম আলো

গাজীপুর নগরের জরুন এলাকায় বকেয়া বেতন ও বোনাসের দাবিতে কেয়া গ্রুপের বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকেরা দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করছেন। আজ মঙ্গলবার সকালে তাঁরা কোনাবাড়ী–কাশিমপুর সড়ক অবরোধ করেন। পরে ১০টার দিকে শিল্প পুলিশ এসে সড়ক থেকে তাঁদের সরিয়ে দেয় এবং যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

পরে শ্রমিকেরা কারখানার প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নেন। বেলা একটায় এ প্রতিবেদন লেখার সময় শ্রমিকেরা সেখানেই অবস্থান করছিলেন।

জরুন এলাকায় কেয়া নিট কম্পোজিট নামে সুতা তৈরির এ কারখানার অবস্থান। এ ছাড়া এখানে কেয়া স্পিনিং মিলস, কেয়া কটন, কেয়া ইয়ার্ন মিলস, কেয়া, ডাইং অ্যান্ড নিটিং ও কেয়া কসমেটিকসের কারখানা রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে প্রায় আট হাজার শ্রমিক কর্মরত। তাঁদের মধ্যে প্রায় এক হাজার প্রতিবন্ধী শ্রমিক রয়েছেন।

কারখানার শ্রমিক ও শিল্প পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিশ্রুতি দিলেও কারখানা কর্তৃপক্ষ গত ফেব্রুয়ারি মাসের বকেয়া বেতন, বকেয়া ছুটির টাকা ও ঈদ বোনাস দেয়নি। গত রোববার বেতন–বোনাস চাইলে কারখানা কর্তৃপক্ষ টালবাহানা শুরু করে। বেতন-বোনাসের দাবিতে গতকাল সোমবার সকাল ছয়টা থেকে কারখানায় শ্রমিকেরা বিক্ষোভ শুরু করেন। পুলিশের মধ্যস্থতায় পরে তাঁরা সড়ক ছেড়ে কারখানার ফটকে অবস্থান নেন। ওই দিন কারখানা কর্তৃপক্ষ একটি নোটিশ সাঁটিয়ে দেয়। এতে লেখা ছিল, ৪ এপ্রিল বাৎসরিক ছুটির টাকা এবং ৭ এপ্রিল শ্রমিকদের বেতন–বোনাস দেওয়া হবে। তবে ওই নোটিশে কারখানা কর্তৃপক্ষের কোনো স্বাক্ষর ছিল। নোটিশ দেওয়ার কিছু সময় পর শ্রমিকেরা ওই নোটিশ ছিঁড়ে ফেলেন।

গতকাল আন্দোলনের মুখে বিকেলে শুধু কেয়া স্পিনিং মিলের শ্রমিকদের ঈদ বোনাস দেওয়া হয়। ইফতারের পর স্পিনিং মিলের শ্রমিকদের সঙ্গে কেয়া নিট কম্পোজিটের শ্রমিকেরা কোনাবাড়ী–কাশিমপুর সড়ক অবরোধ করে রাখেন। রাত ১১টার দিকে তাঁরা সড়ক থেকে সরে যান। তবে কারখানার মূল ফটকে রাতের পালার শ্রমিকেরা অবস্থান নেন। আজ সকালে আরও শ্রমিক এ আন্দোলনে যোগ দেন। তাঁরা কারখানাসংলগ্ন সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।

কয়েকজন শ্রমিক জানান, শ্রমিকদের গত ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। ঈদ বোনাসও দেওয়া হয়নি। কারখানার অন্য স্টাফদের বেতন ছয় মাস বকেয়া রেখেছে। এখন আন্দোলন ছাড়া কিছু করার নেই।

মারুফ নামের এক শ্রমিক বলেন, আন্দোলনের মুখে কেয়া স্পিনিং মিলস, কেয়া কটন ও কেয়া ইয়ার্ন মিলসের শ্রমিকদের ঈদ বোনাস দেওয়া হয়েছে। তবে কেয়া নিট কম্পোজিট, কেয়া ডাইং অ্যান্ড নিটিং এবং কেয়া কসমেটিকসের শ্রমিকেরা বোনাস পাননি।

গাজীপুর শিল্প পুলিশের কাশিমপুর জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীপক চন্দ্র মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, ওই কারখানার শ্রমিকেরা বেতন ও বোনাসের দাবিতে গতকাল থেকে আন্দোলন করছেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে সড়ক থেকে সরানো হয়েছে। তবে শ্রমিকেরা জানিয়েছেন, বকেয়া বেতন পরিশোধ না করলে তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।