ফেসবুকে পরিচিত তরুণদের বিরুদ্ধে কলেজছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ

গাজীপুর জেলার মানচিত্র

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় কলেজপড়ুয়া এক ছাত্রীকে (১৭) দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল সোমবার উপজেলার হায়াতখারচালা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ধর্ষণের অভিযোগে আজ মঙ্গলবার শ্রীপুর থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন ওই কলেজছাত্রীর বাবা। এতে চার তরুণকে আসামি করা হয়েছে।

নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্রীর বাড়ি গাজীপুর সদর উপজেলায়। অন্যদিকে অভিযুক্ত তরুণদের বাড়ি শ্রীপুরে। পুলিশের কাছে দেওয়া অভিযোগে এক তরুণের (২২) নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি ওই কলেজছাত্রীর ফেসবুক বন্ধুতালিকায় ছিলেন।

থানায় করা অভিযোগ ও নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ফেসবুকে পরিচয়ের সূত্র ধরে এক তরুণ ও তাঁর তিন সহযোগী গতকাল বিকেলে ওই কিশোরীকে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে তুলে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণ করেন। এরপর ওই ছাত্রীর শরীরে থাকা স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নিয়ে তাকে অজ্ঞান অবস্থায় সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশায় তুলে দিয়ে পালিয়ে যান অভিযুক্ত তরুণেরা। খবর পেয়ে ওই ছাত্রীর বাবা মেয়েকে উদ্ধার করে প্রথমে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই কিশোরীকে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।

ওই কলেজছাত্রীর বাবা প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল কলেজে তাঁর মেয়ের পরীক্ষা ছিল। এ জন্য সকাল ১০টার দিকে সে কলেজে যায়। ক্লাস-পরীক্ষা শেষে বিকেল পর্যন্ত বাড়িতে না ফেরায় মেয়ের মুঠোফোন নম্বরে কল দেন তিনি। কিন্তু কোনো সাড়া না পেয়ে কলেজে গিয়ে জানতে পারেন, তাঁর মেয়ে ক্লাস-পরীক্ষা শেষে কলেজ থেকে বেরিয়ে গেছে। তিনি মেয়ের মুঠোফোনে আবার কল দিলে অজ্ঞাতপরিচয় এক তরুণ ফোন ধরে তাঁকে জানান, তাঁর মেয়ে হায়াতখারচালা এলাকার কুটুমবাড়ীর কাছে আছে। সেখানে যাওয়ার পথে অজ্ঞাতপরিচয় এক অটোরিকশাচালক তাঁকে (ছাত্রীর বাবা) ফোন দিয়ে শ্রীপুর-কাপাসিয়া সড়কে যেতে বলেন। পরে সেখানে গিয়ে একটি অটোরিকশার মধ্যে অজ্ঞান অবস্থায় মেয়েকে পান। এ সময় অটোরিকশাচালক তাঁকে জানান, অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজন তরুণ মেয়েটিকে অজ্ঞান অবস্থায় অটোরিকশায় তুলে দিয়ে পালিয়ে যান।

শিক্ষার্থীর বাবা আরও বলেন, জ্ঞান ফেরার পর মেয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছে। সে জানিয়েছে, কলেজ থেকে বের হওয়ার পর ফেসবুক বন্ধু তালিকায় থাকা ওই তরুণের সঙ্গে তার দেখা হয়। এ সময় ছেলেটি তাকে একটি ডাব খেতে দেয়। ডাব খাওয়ার পরই তার মাথা ঘুরতে থাকে। এরপর ওই তরুণসহ তাঁর তিন সহযোগী মেয়েটিকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় তুলে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে যান এবং ধর্ষণ করেন।

কিশোরীর বাবার দেওয়া অভিযোগের বিষয়ে জানতে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ এস এম নাসিমের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি সাড়া দেননি।

গাজীপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (কালিয়াকৈর সার্কেল) আজমীর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা ঘটনাটি তদন্ত করছি।’