১২ ঘণ্টার ব্যবধানে আবার সংঘর্ষে জড়াল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের দুটি পক্ষ

ছাত্রলীগের দুটি উপদলের সংঘর্ষের সময় দেশীয় অস্ত্র হাতে তিন তরুণ। আজ দুপুরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আমানত হলের সামনেছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে খাবার টেবিলে বসা নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডার জের ধরে ছাত্রলীগের সিএফসি ও সিক্সটি নাইন উপপক্ষের মধ্যে আবারও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে আজ বৃহস্পতিবার বেলা একটা থেকে দ্বিতীয় দফায় এ সংঘর্ষ শুরু হয়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত অন্তত পাঁচ নেতা–কর্মীর আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে তাঁদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

গতকাল বুধবার রাত ১২টার দিকে দুই পক্ষের নেতা–কর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছিল। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মোহাম্মদ মিজনুর রহমানসহ ছাত্রলীগের সাত নেতা–কর্মী আহত হন। আজ দ্বিতীয় দফা সংঘর্ষের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নুরুল আজিম সিকদারের মুঠোফোনে পাঁচবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ধরেননি।

এই প্রতিবেদন লেখার সময় সিক্সটি নাইন উপপক্ষের নেতা–কর্মীরা শাহজালাল হলের সামনে এবং সিএফসির নেতা–কর্মীরা শাহ আমানত হলের সামনে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অবস্থান করছেন। দুই পক্ষই একে অপরকে লক্ষ করে ইটপাটকেল ছুড়ছে।

যেভাবে ঘটনার সূত্রপাত
গতকাল রাত ১০টার দিকে শাহ আমানত হলের সামনে ঢাকা হোটেল নামের এক খাবারের দোকান থেকে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। সিক্সটি নাইন উপপক্ষের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের উপপ্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক মাহফুজ আল মামুন সেখানে বসে খাবার খাচ্ছিলেন। একই সময়ে সিএফসি উপপক্ষের তৃতীয় বর্ষের (২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ) কয়েকজন কর্মী সেখানে খাবার খেতে যান। বসার জায়গা না থাকায় সিএফসির কর্মীরা মাহফুজকে সরে গিয়ে জায়গা দিতে বলেন। এ নিয়ে ওই কর্মীদের সঙ্গে মাহফুজের বাগ্‌বিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে লাঠিসোঁটা, রামদা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সিক্সটি নাইন উপপক্ষের নেতা–কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এবং সিএফসির নেতা–কর্মীরা শাহ আমানত হলের সামনে জড়ো হোন। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।

কর্তব্যরত চিকিৎসককে অপহরণ

গতকাল রাতে সংঘর্ষের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের কর্তব্যরত চিকিৎসক টিপু সুলতানকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে টিপু সুলতান প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাতে ছাত্রলীগের কয়েকজন এসে তাঁকে জোর করে নিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেখে আসেন। তবে তাঁদের নাম তিনি জানেন না। ঘণ্টা দুয়েক পরে তিনি নিজেই আবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে এসেছেন।

সংঘর্ষের বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন বিকেল সাড়ে চারটায় প্রথম আলোকে বলেন, এখন পরিস্থিতি শান্ত। শাহজালাল আর শাহ আমানত পাশাপাশি হল। গতকালের ঘটনাার পর প্রশাসন কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেনি৷ প্রশাসনের গাফিলতির কারণে আজ এ ঘটনা ঘটেছে।

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সিক্সটি নাইনের নেতা সাইদুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতি অনেক দিন ধরেই দুটি পক্ষ বিভক্ত। একটি পক্ষ শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী ও আরেকটি সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেয়। এ দুটি পক্ষের আবার ১১টি উপপক্ষ রয়েছে। এর মধ্যে আ জ ম নাছির উদ্দীনের নয়টি ও মহিবুল হাসানের দুটি উপপক্ষ রয়েছে।

আরও পড়ুন