ঘূর্ণিঝড়ে সাতকানিয়ায় এক নারীর মৃত্যু, ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি, বিদ্যুৎ-ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন
ঘূর্ণিঝড় হামুনের তাণ্ডবে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় টিনের ঘরে গাছচাপা পড়ে এক নারী নিহত হয়েছেন। খাগরিয়া ইউনিয়নের মাঝেরপাড়া এলাকায় একটি টিনের ঘরে গাছচাপা পড়ে বকুমা খাতুন নামের এক বৃদ্ধ নারী নিহত হয়েছেন। তাঁর নাম বকুমা খাতুন (৬৫)। তিনি উপজেলার খাগরিয়া ইউনিয়নের মাঝেরপাড়া এলাকার মৃত নূর আহমদের স্ত্রী। নিহত নারীর পরিবারকে প্রাথমিকভাবে উপজেলা প্রশাসন থেকে ২৫ হাজার টাকা সাহায্য দেওয়া হয়েছে।
বিদ্যুৎ বিভাগ, উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মঙ্গলবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে প্রচণ্ড বেগে অন্তত ১০ মিনিট ঘূর্ণিঝড় হামুনের তাণ্ডব চলে। এ সময় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে যায়, উপড়ে পড়ে বিদ্যুতের অন্তত ৫০টি খুঁটি। কয়েক শ গাছপালা উপড়ে যায় ও ভেঙে পড়ে। মঙ্গলবার রাত ৯টা থেকে আজ বুধবার বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত পুরো উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় ইন্টারনেট–সংযোগও পাওয়া যাচ্ছে না।
সাতকানিয়া পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এনামুল কবির প্রথম আলোকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় হামুনের তাণ্ডবে ডলু ব্রিজ-গোলাঘাট বাজার সড়কের জেলেপাড়া এলাকায় বিশাল একটি শিশুগাছ ভেঙে সড়কের পাশে দাঁড়ানো একটি মাইক্রোবাসের ওপর পড়ে। এতে মাইক্রোবাসের সামনের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আজ সকাল ১০টা পর্যন্ত সড়কটিতে গাড়ি চলাচল বন্ধ ছিল। বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় মুঠোফোনে কোথাও যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না। ইন্টারনেটের সংযোগও পাওয়া যাচ্ছে না।
খাগরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আকতার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে গাছ উপড়ে টিনের একটি ঘরের ওপর পড়লে এক বৃদ্ধ নারী নিহত হন। ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে আশপাশের ১০-১১টি ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, গাছপালা ভেঙে পড়েছে শত শত।
সাতকানিয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির উপমহাব্যবস্থাপক মো. সাইফুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহের তার ছিঁড়ে গেছে। গাছের ডাল ভেঙে পড়ে আছে বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনে। বিদ্যুতের ৩০টির বেশি খুঁটি উপড়ে পড়েছে। নতুন করে খুঁটি বসানো ও সঞ্চালন লাইনের তার ঠিকঠাক করতে একটু সময় লাগছে।
ঘূর্ণিঝড় হামুনের তাণ্ডবে এ পর্যন্ত চারজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বাকি তিনজনের মৃত্যু হয়েছে কক্সবাজারে। নিহত ব্যক্তিরা হলেন কক্সবাজার শহরের পাহাড়তলী এলাকার আবদুল খালেক (৪২), মহেশখালী উপজেলার বড়মহেশখালী ইউনিয়নের গোরস্তানপাড়ার হারাধন দে (৪৫) ও চকরিয়া উপজেলার বদরখালী গ্রামের আশকার আলী (৪৫)। ঘরের দেয়াল চাপা পড়ে আবদুল খালেক এবং গাছচাপায় অপর দুজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।