রাজশাহীতে বই পড়ে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
বই পড়ায় কৃতিত্বের জন্য রাজশাহী মহানগরের ৫৬টি স্কুলের ২ হাজার ৩০৩ জন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার দিয়েছে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ও গ্রামীণফোন। শনিবার রাজশাহী জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তন থেকে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের আয়োজনে গ্রামীণফোনের সহযোগিতায় দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য পুরস্কার বিতরণ উৎসবের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ, জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার, লেখক ও পর্যটক ইনাম আল হক, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি আবদুন নূর তুষার, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের নাটোরের সংগঠক অধ্যাপক অলোক মৈত্র, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সংগঠক অধ্যাপক মাজহারুল ইসলাম, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের রাজশাহী অঞ্চলের উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহা. আবদুর রশিদ, গ্রামীণফোনের রাজশাহী বিজনেস সার্কেলের আঞ্চলিক প্রধান মাহমুদুল হাসান ও বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের পরিচালক শামীম আল মামুন।
জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে দিনব্যাপী উৎসবের শুরু হয়। শুভেচ্ছা বক্তব্যে বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ বলেন, ‘বই পড়া মানে জ্ঞান অর্জনের দরজা খুলে দেওয়া, বই পড়া আমাদের মুক্তভাবে ভাবতে শেখায়। তাই ছাত্রছাত্রীদের বেশি বেশি বই পড়তে হবে।’
পুরস্কার পাওয়া শিক্ষার্থীদের বেশির ভাগই মেয়ে। তাদের সাফল্যের প্রসঙ্গ টেনে লেখক ও পর্যটক ইনাম আল হক বলেন, ‘আমার মা ছিলেন আমার জীবনের প্রথম শিক্ষক। তাঁর কাছ থেকেই জীবনের পাঠ নিয়েছি। শিক্ষাজীবনে অনেক সাফল্য পেলেও মায়ের চোখে গৌরবের মানদণ্ড ছিল ভিন্ন। আমি বিশ্বাস করি নারীর ভাষা, নারীর জ্ঞান দিয়েই পরিবার ও সমাজের সুন্দর করা সম্ভব।’
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি আবদুন নূর তুষার শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘তুমি যখন একটা বই পুরস্কার নিয়ে বাড়ি যাবে, তখন মনে করবে তুমি বই নিয়ে যাবে না, তুমি একজন বিশ্ববরেণ্য লেখকের হাত ধরে বাড়ি ফিরছ। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, ম্যাক্সিম গোর্কি, টলস্টয়—এঁদের কাউকে আমরা দেখিনি; কিন্তু এঁদের লেখা বই পড়ে আমরা তাঁদের ভাবনাকে জানতে পারছি। তার মানে আমরা তাঁদের সঙ্গেই আছি।’
গ্রামীণফোনের রাজশাহী অঞ্চলের প্রধান মাহমুদুল হাসান বলেন, তরুণেরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তাঁদের মধ্যে যেন মানবিক ও মানসিক উৎকর্ষের বিকাশ ঘটে, সে জন্য দুই দশক ধরে এ মহতী উদ্যোগের পাশে আছে গ্রামীণফোন। তরুণদের জ্ঞানের বিকাশ ও মানসিক উৎকর্ষের জন্য বই পড়ার বিকল্প নেই। আলোকিত মানুষ গড়ার অংশ হিসেবে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র যে বই পড়া কর্মসূচি হাতে নিয়েছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। এ উদ্যোগের অংশ হতে পেরে তাঁরাও গর্বিত।
বিশ্সাহিত্য কেন্দ্রের পরিচালক শামীম আল মামুন স্বাগত বক্তব্যে বছরজুড়ে বই পড়া কর্মসূচি সফলভাবে পরিচালনায় সহায়তা করার জন্য শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক, সংগঠক ও পৃষ্ঠপোষকদের ধন্যবাদ জানান। দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য পুরস্কার বিতরণ উৎসব আয়োজনে সার্বিক সহযোগিতার জন্য গ্রামীণফোনকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
পুরস্কার পাওয়াদের মধ্যে ৩৮টি স্কুলের ১ হাজার ৬৬৪ জন সরাসরি মঞ্চ থেকে পুরস্কার নেয়। তাদের মধ্যে ১ হাজার ২৪৪ জন ছাত্রী ও ৪২০ জন ছাত্র এবং ১৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পক্ষে স্কুলের শিক্ষক ও সংগঠক পুরস্কার নেন। স্বাগত পুরস্কার পেয়েছে ১ হাজার ১১৭ জন, শুভেচ্ছা পুরস্কার পেয়েছে ৭২৮ জন, অভিনন্দন পুরস্কার পেয়েছে ৩৮৩ জন এবং সেরা পাঠক পুরস্কার পেয়েছে ৭৫ জন। দিনব্যাপী উৎসবের আয়োজন ও পুরস্কারের বই স্পনসর করেছে গ্রামীণফোন লিমিটেড।