খুলনায় বকেয়া পরিশোধের দাবিতে পাটকলশ্রমিকদের অনশন কর্মসূচি

বকেয়া পাওনা এককালীন পরিশোধসহ ছয় দফা দাবিতে থালা হাতে অনশন কর্মসূচি পালন করছেন খুলনার বেসরকারি পাটকলগুলোর শ্রমিকেরা। আজ রোববার খুলনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে
ছবি: সাদ্দাম হোসেন

খুলনায় বন্ধ হয়ে যাওয়া বেসরকারি পাটকলশ্রমিক–কর্মচারীরা তাঁদের বকেয়া পাওনা এককালীন পরিশোধসহ ছয় দফা দাবিতে ভুখামিছিল ও অনশন কর্মসূচি পালন করেছেন। আজ রোববার সকাল ১০টার দিকে খুলনা নগরে ভুখামিছিল বের করেন তাঁরা। পরে খুলনা ফেরিঘাট মোড় থেকে থালাবাসন হাতে নিয়ে মিছিল করে খুলনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অনশন কর্মসূচি শুরু করেন শ্রমিকেরা।

খুলনার আটরা ও মীরেরডাঙ্গা শিল্পাঞ্চলে বন্ধ হওয়া ব্যক্তিমালিকানাধীন মহসেন, সোনালী, এ্যাজাক্স, আফিল ও জুট স্পিনার্স পাটকলের শ্রমিকেরা এসব কর্মসূচি পালন করেন। বন্ধ হওয়া হুগলী বিস্কুট কোম্পানির শ্রমিকেরাও পাটকলশ্রমিকদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন।

কর্মসূচিতে সভাপতিত্বে করেন বেসরকারি পাট, সুতা বস্ত্রকল শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি শেখ আমজাদ হোসেন। এটি সঞ্চালনা করেন প্রচার সম্পাদক সাইফুল্লাহ তারেক। কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রসুল খান, মো. সাইফুল ইসলাম, শ্রমিকনেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিল কাজী, বীর মুক্তিযোদ্ধা কারি আসহাব উদ্দিন, সেকেন্দার আলী, লিয়াকত আলী মুন্সি, নিজাম উদ্দিন, আজাহার আলী, কাজী আমির মুন্সি, বাবুল হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।

শ্রমিকনেতারা বলেন, কারখানার মালিকেরা পাটকল দেখিয়ে ব্যাংক থেকে কোটি কোটি টাকা ঋণ নিচ্ছেন। কিন্তু ওই টাকা ব্যয় করছেন অন্য খাতে। আর শ্রমিকেরা তাঁদের বকেয়া বেতন, গ্র্যাচুইটি, ভবিষ্য তহবিলের জন্য রাজপথে আন্দোলন করছেন, এটা খুবই দুঃখজনক। সরকারি পাটকল বন্ধ করার কিছুদিন পর সরকার শ্রমিকদের পাওনা এককালীন পরিশোধ করেছে। অথচ বছরের পর বছর বেসরকারি পাটকলের মালিকেরা তাঁদের কারখানা বন্ধ ও শ্রমিকদের চূড়ান্ত পাওনা পরিশোধ না করেও বহাল তবিয়তে আছেন। বকেয়া পাওনার জন্য তাঁরা বিভিন্ন জায়গায় ধরনা দিয়েছেন। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।

অনশন কর্মসূচি থেকে শ্রমিকদের দাবি আদায়ে শ্রমিকনেতারা ১৬ নভেম্বর সকাল ১০টায় গাফফার ফুড মোড়ে ফেডারেশনের অস্থায়ী কার্যালয়ে জরুরি সভা ও ১৮ নভেম্বর বিকেল চারটায় খুলনার রেলগেট এলাকায় শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ানের বাসভবন ঘেরাও কর্মসূচি পালন করা হবে বলে ঘোষণা দেন। এর মধ্যে তাঁদের দাবি পূরণ করা না হলে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে রাজপথ–রেলপথ অবরোধসহ কঠিন কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন শ্রমিকনেতারা।
এরপর বেলা দেড়টার দিকে শ্রমিক ফেডারেশনের মহানগরীর সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান শ্রমিকদের শরবত পান করিয়ে অনশন ভঙ্গ করান।