সহকারী প্রক্টরের পক্ষে-বিপক্ষে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, ক্যাম্পাসে উত্তেজনা

শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের মুখোমুখি অবস্থানের কারণে দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত ক্যাম্পাসে উত্তেজনা তৈরি হয়। শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে
ছবি: প্রথম আলো

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ইয়াহিয়া ব্যাপারীর পক্ষে ও বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। একটি পক্ষ তাঁর বিরুদ্ধে এক শিক্ষার্থীকে থাপ্পড় দেওয়ার অভিযোগ তুলে তাঁকে অপসারণের দাবি জানান। অন্য পক্ষ প্রক্টরের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বিক্ষোভ করেন।

শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের মুখোমুখি অবস্থানের কারণে আজ শনিবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত ক্যাম্পাসে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দুই পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেলা দুইটার দিকে হঠাৎ শিক্ষার্থীদের দুটি পক্ষ ক্যাম্পাসে জড়ো হতে শুরু করে। কিছুক্ষণ পর একটি পক্ষ সহকারী প্রক্টর ইয়াহিয়া ব্যাপারীর অপসারণের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে। একপর্যায়ে তারা বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে। বিষয়টি দেখে কিছুক্ষণের মধ্যে অন্য পক্ষ সহকারী প্রক্টরের পক্ষ নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। এতে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য মোস্তফা কামাল খান ও প্রক্টর কামাল হোসেন শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর বিকেল সাড়ে চারটার দিকে দুই পক্ষকে বুঝিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন তাঁরা।

সহকারী প্রক্টরের অপসারণ চাওয়া শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলে দুই দল শিক্ষার্থীর মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়েছিল। সহকারী প্রক্টর তাদের মধ্যে একটি পক্ষকে সমর্থন দেন এবং প্রটোকল ভেঙে প্রক্টরের সঙ্গে আলোচনা না করেই হলে গিয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে গালাগাল ও চড়-থাপ্পড় দেন। তাঁদের দাবি, শিক্ষার্থীরা ওই ঘটনার প্রতিবাদ করলে প্রক্টর আরও ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। এ জন্য তাঁরা বিক্ষোভ করে সহকারী প্রক্টরের অপসারণ চাচ্ছেন। অন্যথায় তাঁরা আরও বড় কর্মসূচি নেবেন।

তবে অন্য পক্ষের দাবি, সকালে সমাজকর্ম বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী হলে গিয়ে সনাতন শিক্ষার্থীদের কাছে চাঁদা দাবি করেন। তাঁরা চাঁদা না দেওয়ায় মারপিট শুরু করেন ওই শিক্ষার্থীরা। এরপর সহকারী প্রক্টরকে খবর দেওয়া হয়। তিনি এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে ওই শিক্ষার্থীরাই উল্টো সহকারী প্রক্টরকে অপদস্থ করেন। এখন তাঁরাই প্রক্টরের অপসারণ চাচ্ছেন। তাই প্রতিবাদ জানাতে তাঁরা বিক্ষোভ করছেন।

এ বিষয়ে সহকারী প্রক্টর ইয়াহিয়া ব্যাপারী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ও আবাসিক শিক্ষক। হলে ঝামেলার খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে দুই পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা করেছি। তাদের অফিসে এসে কথা বলার অনুরোধ করেছি। এর কিছুক্ষণ পর দেখি, দুই পক্ষের বিক্ষোভ চলছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কামাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ব্যস্ত থাকায় সহকারী প্রক্টর হলে গিয়ে ঝামেলা মিটিয়েছেন। পরে শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষ ভুল বোঝাবুঝি থেকে বিক্ষোভ শুরু করে। তাঁরা বুঝিয়ে তাদের শান্ত করেছেন। এখন পরিবেশ শান্ত আছে। হলে চাঁদাবাজি বা মারপিটের কোনো লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।