অটোরিকশাচালক হত্যার দায়ে দুই ভাইয়ের মৃত্যুদণ্ড

মাদারীপুরে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক সুলতান ব্যাপারীকে হত্যার দায়ে দুই ভাইকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন আদালত। আজ সোমবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক নিতাই চন্দ্র সাহা এই রায় দেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই ভাই হলেন জনি ব্যাপারী (২২) ও তাঁর ভাই শরিফুল ব্যাপারী (২০)। তাঁরা রাজৈর উপজেলার সুতারকান্দি গ্রামের কুদ্দুস ব্যাপারীর ছেলে।

মামলার নথি ও আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৯ এপ্রিল রাত ৯টার দিকে মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘটকচর থেকে গাছবাড়িয়া এলাকার সুলতান ব্যাপারীর ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় যাত্রীবেশে ওঠেন চারজন। তাঁরা উপজেলার ত্রিভাগদী এলাকায় নিয়ে সুলতানকে কুপিয়ে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনিয়ে নেন। অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় ব্যক্তিরা বিষয়টি টের পেয়ে ওই চারজনকে আটক করে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে ওই চারজনকে আটক করে ও সুলতানের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

ওই ঘটনার পরদিন নিহত সুলতানের স্ত্রী হাফিজা বেগম বাদী হয়ে মাদারীপুর সদর মডেল থানায় চারজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। পরে তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ। পরবর্তী সময়ে আসামিরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ২০১৮ সালের ২০ সেপ্টেম্বর চারজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তৎকালীন তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) বিল্টু দাস। যুক্তিতর্ক ও ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালতের বিচারক এই রায় দেন।

নিহত সুলতানের স্ত্রী হাফিজা বেগম বলেন, ‘একটি ইজিবাইকের জন্য আমাকে ওরা বিধবা করেছে। ওদের মৃত্যুদণ্ডের রায় হওয়ায় আমি খুশি। সরকারের কাছে এই রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি জানাই।’

মাদারীপুর জেলা ও দায়র জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) সিদ্দিকুর রহমান সিং বলেন, চার আসামির দুজনের ফাঁসি হয়েছে। বাকি দুই আসামি অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাদের বিচার চলমান আছে। শিগগিরই তাদের বিচার হবে।

রায় ঘোষণার সময় দুই আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন বলে জানান আদালত পুলিশের পরিদর্শক রমেশ চন্দ্র দাস। তিনি বলেন, রায়ের পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।