অনশন ভাঙিয়ে তিন বোনকে বাবার জমি বুঝিয়ে দিলেন পুলিশ সুপার

বরগুনার পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে তিন বোন তাঁদের বাবার জমি ও বাড়ি ফিরে পেয়েছেন। আজ বিকেলে বামনা উপজেলার গোলাঘাটা গ্রাম
ছবি: প্রথম আলো

বরগুনায় দখল হয়ে যাওয়া বাবার জমি ও বাড়ি ফেরত পেতে কাফনের কাপড় পরে অনশন কর্মসূচি পালন করেন তিন বোন। এর পাঁচ ঘণ্টা পর পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর হোসেন মল্লিক অনশনে ভাঙিয়ে তাঁদের গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যান এবং বাবার জমি ও বাড়ি বুঝিয়ে দেন।

ওই তিন বোন হলেন রুবি আক্তার (২৭), জেসমিন আক্তার (১৮) ও মোসা. রোজিনা (১৬)। তাঁরা বরগুনার বামনা উপজেলার গোলাঘাটা গ্রামের মৃত আবদুল রশীদের মেয়ে।

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বুধবার সকাল থেকে বরগুনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অনশনে বসেন ওই তিন বোন। খবর পেয়ে বরগুনা জেলা পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর মল্লিক গিয়ে তাঁদের বুঝিয়ে অনশন প্রত্যাহার করান। পরে তিনি ওই তিন বোনকে নিয়ে বামনা উপজেলার গোলাঘাটায় তাঁদের গ্রামের বাড়িতে যান। সেখানে অভিযুক্ত স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন এবং ওই তিন বোনকে তাঁদের পৈতৃক ১৫ শতাংশ জমি বুঝিয়ে দেন পুলিশ সুপার। তাৎক্ষণিক ওই জমিতে ঘর তোলার জন্য তাঁদের অর্থও প্রদান করেন তিনি।

আরও পড়ুন

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বামনা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইতুল ইসলাম, বামনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিবেক সরকার, বামনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.বশিরুল আলম প্রমুখ।

ওই তিনজনের বড় রুবি আক্তার বলেন, ‘আমাদের মা-বাবা নেই। বাবার বাড়ি ও জমি সব আমার স্বজনেরা দখল করে রেখেছিলেন। ওই জমি দখলমুক্ত করতে প্রশাসনসহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরেও কোনো লাভ হয়নি। বাধ্য হয়ে ডিসি অফিসের সামনে অনশনে বসেছিলাম। পুলিশ সুপার স্যার এসে আমাদের জমি দখলমুক্ত করার আশ্বাস দিলে আমরা অনশন প্রত্যাহার করি। এরপর স্যার আমাদের গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসেন। আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) স্যারের অর্থায়নে আমাদের জমিতে একটি ঘর তুলতে শুরু করব।’

রুবি আক্তার আরও বলেন, ‘আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চাই। আমাদের একটি স্থায়ী আয়ের পথ দরকার।’

বরগুনা জেলা পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর মল্লিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘মানবিক কারণে ওই তিন বোনের পাশে দাঁড়িয়েছি। আমরা তাঁদের ১৫ শতাংশ জমি বুঝিয়ে দিতে পেরেছি। জেলা পুলিশের অর্থায়নে তাঁদের থাকার জন্য দু-এক দিনের মধ্যে একটি ঘর তুলে দেব।’

বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, অনশন শুরু করার পর তিনি ওই তিন বোনকে তাঁর কার্যালয়ে ডেকেছিলেন। তবে তাঁরা কেউ আসেননি। পরে তিনি নিজে গিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলেও, কেউ কথা বলতে রাজি হননি। ওই তিন বোন এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।