অনুমতি বাতিল, সিলেটে চরমোনাই পীরের মাহফিল হচ্ছে না

সিলেটে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মো. রেজাউল করীমের (চরমোনাই পীর) তিন দিনব্যাপী ওয়াজ মাহফিল বাতিল করা হয়েছে। পুলিশ অনুমতি দিয়ে আবার বাতিল করায় ওয়াজ মাহফিল হচ্ছে না বলে জানিয়েছে ইসলামী আন্দোলনের সহযোগী সংগঠন ‘বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটি’ সিলেট বিভাগীয় শাখা। মঙ্গলবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তারা এ তথ্য জানায়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ১০ ডিসেম্বর থেকে সিলেট নগরীর আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে তিন দিনব্যাপী ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করেছিল ‘বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটি’ সিলেট বিভাগীয় শাখা। সংগঠনটির পক্ষে লিখিত বক্তব্যে মোয়াজ্জেম হোসেন খান বলেন, বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটি সমাজসেবা মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধিত একটি ধর্মীয় ও সামাজিক সংগঠন। এই কমিটি সামাজিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি দেশব্যাপী ওয়াজ মাহফিল ও হালকায়ে জিকিরের আয়োজন করে সামাজিক মূল্যবোধ সৃষ্টি ও ধর্মীয় অনুশাসন প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।

২০০৩ সাল থেকে সিলেটে বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে প্রতিবছর ওয়াজ মাহফিল ও হালকায়ে জিকিরের আয়োজন করে আসছে উল্লেখ করে বলা হয়, এ বছর ১০, ১১ ও ১২ ডিসেম্বর আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে তিন দিনব্যাপী ওয়াজ মাহফিলের আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মহানগর পুলিশের কাছ থেকে ১ ডিসেম্বর লিখিত অনুমতি নিয়ে ওয়াজ মাহফিল সফলের লক্ষ্যে প্রচার-প্রচারণা, পোস্টার, লিফলেট, ব্যানার, তোরণ, মাইকিং এবং অতিথিদের আমন্ত্রণ জানিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল। এ অবস্থায় ৬ ডিসেম্বর পুলিশ কমিশনার কার্যালয় থেকে ওয়াজ মাহফিলের সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, ৬ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ মিছিল শেষে কিছু যুবক আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে মাহফিল প্রচারের জন্য তৈরি করা চৌহাট্টা পয়েন্টের তোরণ ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। একই সময়ে সুবিদবাজার পয়েন্টসহ বিভিন্ন জায়গায় ওয়াজ মাহফিলের প্রচার মাইকিংয়ের গাড়িতে হামলা এবং চালককে মারধর করার ঘটনাও ঘটে। পুলিশ এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো নিরাপত্তার অজুহাতে ওয়াজ মাহফিল বন্ধ করার নির্দেশ দেয়।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটি সিলেট বিভাগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম, সহসাধারণ সম্পাদক ইসহাক আহমদ, সদস্য নজির আহমদ, রিয়াজুল ইসলাম, হাফিজ মাওলানা মাহমুদুল হাসানসহ বিভাগীয় ও জেলা শাখার নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

অনুমতি দিয়ে আবার বাতিলের কারণ সম্পর্কে মহানগর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপকমিশনার বি এম আশরাফ উল্যাহ প্রথম আলোকে বলেন, যখন অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, তখন দেশের সার্বিক পরিস্থিতি এক রকম ছিল। এখন প্রেক্ষাপট ভিন্ন। ভাস্কর্য নিয়ে উত্তেজনাকর অবস্থায় ওয়াজ মাহফিল শান্তিপূর্ণ না হওয়ার শঙ্কা থাকায় বাতিল করা হয়েছে। মাহফিলস্থলে ভাঙচুর ও হামলার অভিযোগ প্রসঙ্গে অতিরিক্ত উপকমিশনার বলেন, পুলিশ এ বিষয়ে তদন্ত করছে। হামলাকারী চিহ্নিত হলে অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।