অনুমোদন ছাড়া টিকা বিক্রি, ৫ জনকে কারাদণ্ড

চক্রটি বিপজ্জনকভাবে সাধারণ মানুষকে উচ্চ মূল্যে হেপাটাইটিস-বি টিকা দিয়ে আসছিলেন। তাঁদের কারোরই মেডিকেল কিংবা প্যারামেডিকেল শিক্ষা নেই। টিকার কোর্স সম্পর্কেও তাঁদের কোনো ধারণা নেই। এ পর্যন্ত তাঁরা ছয় শতাধিক মানুষকে টিকা প্রয়োগ করেন।

বরিশালে সরকারি অনুমোদন না নিয়ে বিপজ্জনকভাবে সাধারণ মানুষকে উচ্চ মূল্যে হেপাটাইটিস-বি টিকা দিয়ে আসছিল একটি চক্র। খবর পেয়ে এই চক্রের পাঁচ সদস্যকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। আজ সোমবার দুপুরে নগরের টিটিসি লেনের একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাঁদের আটক করে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন দল।

ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্র জানায়, নগরের টিটিসি লেন এলাকার একটি বাড়িতে আল নূর ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের (এনজিও) ব্যানারে দীর্ঘদিন ধরে হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসের টিকা বিক্রি ও তা প্রয়োগ করা হচ্ছিল। স্থানীয় আল আমিন ওরফে গোলাম রব্বানী ও তাঁর চার সহযোগী এই টিকা বিক্রি ও প্রয়োগ করছিলেন। কিন্তু তাঁদের এই টিকা বিক্রি ও তা প্রয়োগের কোনো অনুমোদন নেই। এমনকি তাঁদের কারোরই মেডিকেল কিংবা প্যারামেডিকেল শিক্ষা নেই। হেপাটাইটিস টিকার কোর্স সম্পর্কেও তাঁদের কোনো ধারণা নেই। তাঁরা নিম্নমানের ইনজেকশন কিনে তা উচ্চ মূল্যে বিক্রি করে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিলেন। এ পর্যন্ত তাঁরা ছয় শতাধিক মানুষকে হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসের টিকা প্রয়োগ করেন।

এর আগে ৫০ হাজার টাকায় একটি ক্লিনিক্যাল লাইসেন্স কিনেছিলাম। পরে জানতে পারি, লাইসেন্সটি সঠিক নয়।
মো. আল আমিন, চক্রের মূল হোতা

গোপন সূত্রে এ খবর পেয়ে নগর গোয়েন্দা পুলিশের সহায়তায় আজ দুপুরে ওই এনজিওতে অভিযান চালান ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় এই চক্রের মূল হোতা আল আমিনকে ছয় মাসের এবং তাঁর অপর চার সহযোগী মো. ইমতিয়াজ, সাব্বির হোসেন, রিম্পা খানম ও শম্পা বেগমকে এক মাস করে কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। দণ্ড ঘোষণার পর তাঁদের সবাইকে কারাগারে পাঠানো হয়।

অভিযুক্ত মো. আল আমিন বলেন, কনিকা এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান থেকে হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসের ভ্যাকসিন কিনে প্রতি ডোজ ২০০ টাকা করে ৪ ডোজ গ্রাহকদের দিতেন। এর আগে তিনি ৫০ হাজার টাকায় একটি ক্লিনিক্যাল লাইসেন্স কিনেছিলেন। পরে জানতে পারেন, লাইসেন্সটি সঠিক নয়।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াউর রহমান বলেন, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে হেপাটাইটিস-বির মতো গুরুতর ভাইরাসের মানহীন টিকা দিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিল।