অন্তঃসত্ত্বাকে ‘অ্যাসিড’ নিক্ষেপ, স্বামী-শ্বশুর আটক

অ্যাসিড-সন্ত্রাসের শিকার নারী
প্রতীকী ছবি

মাদারীপুরে যৌতুক না দেওয়ায় সাত মাসের এক অন্তঃসত্ত্বাকে নির্যাতন ও অ্যাসিড নিক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও শ্বশুরের বিরুদ্ধে। গতকাল শনিবার রাতে সদর উপজেলার ঝাউদি ইউনিয়নের কালাইমারা এলাকায় গৃহবধূর বাবার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্ত দুজনকে আটক করেছে পুলিশ।

গৃহবধূর স্বজন ও এলাকাবাসীদের সূত্রে জানা গেছে, ৯ মাস আগে মাদারীপুর সদর উপজেলার বাহের মাদ্রা গ্রামের সোবহান শেখের ছেলে সুমন শেখের (২২) সঙ্গে বিয়ে হয় পাশের কালাইমারা গ্রামের ইউনুস মীরের মেয়ে আয়েশা মিমের (১৯)। বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ির লোকজন বিভিন্ন সময়ে যৌতুক দাবি করে আসছিলেন। এ কারণে পাঁচ মাস আগে বাবার বাড়ি চলে যান মিম।

স্বজনদের অভিযোগ, স্থানীয়ভাবে বেশ কয়েকবার মীমাংসার চেষ্টা করা হলে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন সুমন ও তাঁর পরিবারের লোকজন। গতকাল সন্ধ্যায় মিমের বাবার বাড়ি গিয়ে সুমন ও মিমের শ্বশুর সোবহান শেখ কৌশলে ডেকে ঘরের পেছনে নিয়ে যান। পরে বোতলে থাকা অ্যাসিড নিক্ষেপ করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন মিম। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে হাত ও মুখে অ্যাসিড লাগলে মিম চিৎকার শুরু করেন। পরে তাঁকে জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়।

পরে স্থানীয় লোকজনের পক্ষ থেকে ৯৯৯ নম্বরে কল করা হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মিমের শ্বশুরকে আটক করেন। পরে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত সুমনকেও আটক করে পুলিশ।

মাদারীপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান বলেন, ওই নারীর দুই হাতে ও মুখের একটি অংশে তরলজাতীয় কিছু ছোড়া হয়। তবে এটি অ্যাসিড নাকি অন্য কিছু, তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। ওই নারীকে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে। তিনি আশঙ্কামুক্ত।

মিমের অভিযোগ, তিনি গর্ভবতী হওয়ার পর সুমন বাচ্চা নষ্ট করতে চান আর বাবার কাছে থেকে যৌতুকের এক লাখ টাকা দিতে বলতেন। কিন্তু এতে তিনি রাজি না হওয়ায় মারধর করা হতো। ঘটনার দিন সকালে মুঠোফোনে কল করে হত্যার হুমকি দেন সুমন। পরে সন্ধ্যার দিকে বাড়িতে গিয়ে মুখে অ্যাসিড দেওয়ার চেষ্টা করেন। অ্যাসিড তাঁর হাতে ও কাপড়ে লাগে।

অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে সুমনের বাবা সোবহান শেখ বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে মিমের কথা-কাটাকাটি হয়। তাই মিম তাঁর বাবার বাড়িতে চলে যায়। তাকে ফিরে আনতে তিনি ও সুমন মিলে মিমদের বাড়িতে যান সমাধান করতে। কোনো অ্যাসিড মারার ঘটনা ঘটেনি।

মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম মিঞা বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মিমের স্বামী ও তাঁর শ্বশুরকে থানায় আনা হয়েছে। অভিযোগকারীর মেডিকেল রিপোর্ট পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।