অন্যকে ফাঁসাতে গিয়ে ধরা খেলেন ইউপি সদস্য ও ঠিকাদার

হাতকড়া
প্রতীকী ছবি

বরিশালের বানারীপাড়ায় মুজিব জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য নির্মাণাধীন কয়েকটি ঘরের ৩৪টি খুঁটি (পিলার) ভাঙচুরের ঘটনায় স্থানীয় এক ইউপি সদস্য, সংশ্লিষ্ট কাজের ঠিকাদারসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন তোলায় স্থানীয় সুমন কাজী নামের এক যুবককে শায়েস্তা করার জন্য ওই ইউপি সদস্য ও কাজের ঠিকাদার মিলে এই ভাঙচুরের ঘটনা সাজিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। গতকাল সোমবার বিকেলে ৫টার দিকে বরিশাল জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন।

প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় গত ২৩ জানুয়ারি দেশব্যাপী প্রথম ধাপে ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষদের প্রায় ৭০ হাজার ঘর উপহার দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলায় ২০০টি পরিবারের জন্য ২০০ ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়। উপজেলার চাখার ইউনিয়নের সাকরাল গ্রামে ২ একর জমির ওপর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৬৫টি ঘরের কাজও ওই দিন শুরু হয়। গত ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে কে বা কারা নির্মাণাধীন কয়েকটি ঘরের বারান্দার ৩৪টি খুঁটি (পিলার) ভাঙচুর করেন।

চাখার ইউনিয়নের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. বাদশা মিয়া বাদী হয়ে স্থানীয় সোনাহার গ্রামের বাসিন্দা সুমন কাজীসহ অজ্ঞাতনামা তিন-চারজনকে আসামি করে বানারীপাড়া থানায় মামলা করেন।

তবে এই ভাঙচুরের ঘটনা নিয়ে এলাকার মানুষের মধ্যে সন্দেহ দেখা দেয়। পরে জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন বিষয়টি অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. শাহজাহান বিষয়টি অনুসন্ধান শুরু করেন। পরে প্রযুক্তির মাধ্যমে পুলিশ প্রাথমিকভাবে তথ্য পায় বিষয়টির সঙ্গে ঠিকাদার ও শ্রমিক সরদার জড়িত। পরে ওই কাজের ঠিকাদার রাম প্রসাদ মণ্ডল (৩৩), শ্রমিক সরদার ইমরান সিকদারকে (২৭) ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। এতে তাঁরা স্বীকার করেন, কাজের মান খারাপ হওয়া নিয়ে স্থানীয় সুমন কাজী নামের এক যুবক প্রশ্ন তোলেন। এতে ঠিকাদার বেকায়দায় পড়েন। এ জন্য সুমন কাজী নামের ওই যুবককে শায়েস্তা করতে তাঁরা এই ভাঙচুরের ঘটনা ঘটান। এতে স্থানীয় ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য দিপু দত্তও (৪৭) জড়িত।

পুলিশ জানায়, গতকাল দুপুরে এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ঠিকাদার রাম প্রসাদ মণ্ডল, ইউপি সদস্য দিপু দত্ত, শ্রমিক সরদার ইমরান সিকদার, দুই শ্রমিক সাদিক শেখ ও মিশকাত মোল্লাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল সন্ধ্যায় আসামিদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন বলেন, ‘আমাদের অনুসন্ধানে এই ঘটনার প্রকৃত দোষীদের শনাক্ত করা গেছে। মামলার আসামি সুমন কাজীর বিরুদ্ধে এই ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার প্রমাণ মেলেনি।’