অপহরণ ও ধর্ষণের দায়ে পুলিশ সদস্যের যাবজ্জীবন

প্রতীকী ছবি

দিনাজপুরে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে অপহরণ ও ধর্ষণের দায়ে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া এক পুলিশ সদস্যকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও তা অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। দিনাজপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক সিনিয়র জেলা জজ শরীফউদ্দিন আহমেদ বুধবার দুপুরে এ রায় ঘোষণা করেন।

সাজা পাওয়া ব্যক্তির নাম নবীউল ইসলাম (২৩)। তাঁর বাড়ি দিনাজপুর সদর উপজেলার মাতাসাগর পানুয়াপাড়া গ্রামে। নবীউল ঢাকায় শিল্প পুলিশের কনস্টেবল পদে কর্মরত ছিলেন। এ মামলার অপর দুই আসামি নবীউলের ভাই নুরুল ইসলাম ও ভাবি কাওসার ইয়াসমিনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণী সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের এপ্রিলে দিনাজপুর শহরের একটি উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে বটতলী এলাকা থেকে নবীউল ইসলাম ও তাঁর পরিবারের কয়েক সদস্য অপহরণ করেন। তাঁরা তাকে রংপুরের বদরগঞ্জে নিয়ে একটি কাজি অফিসে নবীউলের সঙ্গে বিয়ে দেন। এরপর নবীউল তাকে ঢাকায় নিয়ে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস শুরু করেন। প্রায় দেড় বছর পর নবীউল ওই ছাত্রীকে দিনাজপুরে নিয়ে আসার কথা বলে সৈয়দপুর স্টেশনে নিয়ে আসেন। সেখানে এসে নবীউল ওই ছাত্রীকে বলেন, তার সঙ্গে তাঁর (ওই ছাত্রীর) কোনো বিয়ে হয়নি। একপর্যায়ে নবীউল তাকে দিনাজপুরের একটি বাসে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় ওই ছাত্রী চিৎকার শুরু করলে স্থানীয় লোকজন নবীউলকে আটক করে সৈয়দপুর থানা পুলিশের কাছে তুলে দেন।

পরে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে ২০১৪ সালের জুলাই মাসে ওই ছাত্রীর নানি বাদী হয়ে আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে পুলিশ সদস্য নবীউল ইসলাম, তাঁর ভাই নুরুল ইসলাম (২৮), ভাবি কাওসার ইয়াসমিন (২৪) ও বাবা জাফর আলীর বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই বছরের ১৭ অক্টোবর পুলিশ জাফর আলীকে বাদ দিয়ে বাকি তিন আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। সাক্ষ্য ও প্রমাণের ভিত্তিতে বুধবার আদালত আসামি নবীউলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।

মামলা পরিচালনাকারী রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী তৈয়বা বেগম বলেন, ধর্ষণের মামলায় আদালত ন্যায় বিচার করেছে। এই মামলায় চিকিৎসক, তদন্ত কর্মকর্তাসহ সাতজন সাক্ষ্য দিয়েছেন।