অবশেষে যৌন হয়রানির মামলা রাজশাহীর সেই নার্সের

রাজশাহীতে কর্মস্থলে যৌন নিপীড়নের ‘প্রতিকার চাওয়ায়’ উল্টো বদলির আদেশ হওয়া সেই নার্স মামলা করেছেন। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আজ সোমবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলাটি দায়ের করেন তিনি।

মামলার আসামির নাম মামুন-অর-রহমান। তিনি চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক। অবশ্য মামুন ছুটি নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিপ্লোমা করছেন। ওই কোর্স সম্পন্ন করতে এসেছিলেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেই তিনি নার্সকে যৌন হয়রানি করেন বলে অভিযোগ।

ওই নার্স প্রায় ১০ মাস আগে সরকারি চাকরিতে ঢুকেছেন। গত ১৮ জানুয়ারি তিনি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) দায়িত্ব পালন করছিলেন। সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক মামুন-অর-রহমান তাঁকে যৌন হয়রানি করেন। পরদিন একই ঘটনা ঘটান তিনি। বিষয়টি জানাজানি হলে ২০ জানুয়ারি চিকিৎসক মামুনকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটি ১০ ফেব্রুয়ারি হাসপাতাল পরিচালকের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়।

ওই নার্সের ভাষ্য, যৌন হয়রানির অভিযোগে চিকিৎসক মামুনের বিরুদ্ধে আইনগত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টো তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদনে ওই চিকিৎসককে ক্ষমা করে দেওয়ার সুপারিশ করেছে। প্রতিবেদনের একটি কপি নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরে পাঠান হাসপাতাল পরিচালক। ওই অধিদপ্তরও আলাদা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। সেই তদন্ত এখনো শেষ হয়নি। এরই মধ্যে ১৮ মার্চ ওই নার্সকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে বদলি করা হয়। বদলি আদেশে স্বাক্ষর করেছেন নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল হাই ও মহাপরিচালক সিদ্দিকা আক্তার। ২৪ মার্চের মধ্যে তাঁকে নতুন কর্মস্থলে যোগ দিতে বলা হয়েছিল। তা ছাড়া তাৎক্ষণিক অবমুক্ত হিসেবে গণ্য হওয়ার কথা ছিল। বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে পরদিন বদলির আদেশ বাতিল করা হয়।

নার্সের পক্ষে ট্রাইব্যুনালে মামলার আবেদন দাখিল করেন আইনজীবী শারমীন কানিজ। তিনি বলেন, আদালত মামলার আবেদনটি গ্রহণ করেছেন। বিষয়টি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) দায়িত্ব দিয়েছেন বিচারক। আগামী ২০ এপ্রিল আদালত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।