সিলিন্ডার থেকে গ্যাস স্থানান্তরের সময় বিকট শব্দে বিস্ফোরণ
বগুড়ার শেরপুরে সড়কের পাশে বড় সিলিন্ডার থেকে ছোট সিলিন্ডারে গ্যাস স্থানান্তরের সময় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। আজ শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার শেরপুর-কাজিপুর আঞ্চলিক সড়কের পাশে গাড়িদহ ইউনিয়নের রনবীরবালা ঘাটপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণের বিকট শব্দের সঙ্গে চারপাশে সাদা ধোঁয়ায় ছেয়ে যায়। পথচারী ও দোকানমালিকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
বিস্ফোরণের ঘটনার পরপরই গ্যাস বিক্রির সঙ্গে জড়িত লোকজন সবাই সটকে পড়েন। গাড়িদহ ইউপির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আনোয়ার হোসেন বলেন, রাতারাতি গড়ে ওঠা গ্যাস বিক্রির এই প্রতিষ্ঠানটির কোনো বৈধতা নেই। আবদুল হামিদ নামের এক ব্যবসায়ীর প্রতিষ্ঠান এটি। তাঁর বাড়ি কোথায় স্থানীয় মানুষ কেউ জানেন না। স্থানীয় ফিরোজ আলীর গাড়ির গ্যারেজের জায়গা ভাড়া নিয়ে দুই মাস ধরে বিভিন্ন সিএনজিচালিত গাড়িতে প্রতিদিন ভোররাত থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত গ্যাস বিক্রি করে আসছেন আবদুল হামিদের কর্মচারীরা।
আনোয়ার হোসেন আরও বলেন, অন্তত এক বছর আগে গ্যাস বিক্রির এই প্রতিষ্ঠানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালিত হয়েছিল। সে সময় বৈধ কোনো কাগজপত্র দেখাতে না পারায় গ্যাস বিক্রির প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দিয়েছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। সেই সঙ্গে জরিমানাও করেছিলেন। প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর প্রায় দুই মাস আগে গোপনে আবারও বিভিন্ন সিএনজিচালিত গাড়িতে গ্যাস বিক্রি শুরু করে।
প্রত্যক্ষদর্শী মুদিদোকানি ফজলুল হক বলেন, আনুমানিক দুপুর ১২টার দিকে বড় আকারের একটি সিলিন্ডারভর্তি গ্যাস নিয়ে একটি একটি কাভার্ড ভ্যানে আসে। এরপর বড় সিলিন্ডার থেকে ছোট সিলিন্ডারে গ্যাস স্থানান্তর শুরু করেন কর্মচারীরা। এ সময় পাইপলাইন লিকেজ হয়ে বিকট বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গে গ্যাসের সাদা ধোঁয়া চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে। এই বিকট শব্দ শুনে স্থানীয় মানুষ আতঙ্কে চারপাশে ছোটাছুটি শুরু করে দেন।
জায়গাটি ভাড়া দেওয়া ফিরোজ আলীর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রায়হান-রাকিব ট্রেডার্সের ব্যবস্থাপক মো. রায়হান বলেন, রায়হান-রাকিব ট্রেডার্সের জায়গা ভাড়া নিয়ে আব্দুল হামিদ দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। সিএনজিচালিত বিভিন্ন গাড়িতে গ্যাস বিক্রি করেন তিনি। এই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের কোনো বৈধ কাগজপত্র আছে কি না, তা তিনি জানেন না। হঠাৎ করে আজ দুপুর ১২টার দিকে বড় সিলিন্ডার থেকে ছোট সিলিন্ডারে গ্যাস স্থানান্তরের সময় বিস্ফোরণ ঘটে। এই বিস্ফোরণের ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। তবে ঘটনার পরপরই কাভার্ড ভ্যানটি দ্রুত বের হয়ে চলে যায়। গ্যাস বিক্রির ঘরটিও কর্মচারীরা তালা দিয়ে দ্রুত সটকে পড়েন।
জানতে চাইলে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম বলেন, গ্যাস স্থানান্তরের সময় এ ধরনের বিস্ফোরণের ঘটনা কেউ তাঁকে জানায়নি। তিনি এ ব্যাপারে খোঁজখবর নেবেন। সম্প্রতি যোগদান করা নতুন ইউএনও মায়নুল ইসলাম বলেন, রনবীরবালা ঘাটপাড় এলাকায় বিভিন্ন গাড়িতে সিলিন্ডারে করে যেভাবে গ্যাস বিক্রি করা হচ্ছে, তার কোনো বৈধ কাগজপত্র আছে কি না, তা তিনি খতিয়ে দেখবেন।