অভিযোগকারীকে ইউএনওর বাসায় নিয়ে ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ

বরগুনা জেলার মানচিত্র

বরগুনার আমতলীতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ করায় স্থানীয় এক যুবলীগ নেতাকে তুলে নিয়ে গিয়ে ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী যুবলীগ নেতার অভিযোগ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসাদুজ্জামানের নির্দেশে তাঁর অফিসের কর্মচারী এনামুল হকের নেতৃত্বে সুজন মুসুল্লী, হাবিব গাজীসহ পাঁচ–ছয়জন তাঁকে তুলে নেন। পরে ইউএনওর সরকারি বাসভবনে আটকে রেখে ভয়ভীতি দেখানো হয়।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্প-২–এর অধীনে দ্বিতীয় ধাপে আমতলী উপজেলায় হতদরিদ্রদের জন্য ৩৫০টি ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়। ওই প্রকল্পের গুলিশাখালী ইউনিয়নে ৫০টি ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর মধ্যে ইউএনও কার্যালয়ের কর্মচারী এনামুল হকের নিজ গ্রাম হরিদ্রবাড়িয়ায় গ্রামে ৩০টি ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়। তার মধ্যে ১৪টি ঘর পেয়েছেন তাঁর আত্মীয়েরা। তালিকা তৈরি ও টাকা নিয়ে ঘর দেওয়ার অভিযোগ এনে গুলিশাখালী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা মো. কামাল রাঢ়ী বরগুনা জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। এর জেরেই তুলে নিয়ে ভয়ভীতি দেখানো হয় বলে অভিযোগ কামাল রাঢ়ীর।

যুবলীগ নেতা কামাল রাঢ়ী বলেন, ইউএনও আসাদুজ্জামানের নির্দেশে সুজন মুসুল্লী, হাবিব গাজীসহ পাঁচ–ছয়জন তাঁকে গতকাল শনিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে আসেন। পরে তাঁরা চার ঘণ্টা তাঁকে বিভিন্ন স্থানে আটকে রেখে ধারালো অস্ত্র দেখিয়ে জীবননাশের হুমকি দেন এবং অভিযোগ তুলে নিতে চাপ প্রয়োগ করেন।

তিনি বলেন, ‘রাত সাড়ে ১২টার দিকে সুজন মুসুল্লী, হাবীব গাজীসহ পাঁচ–ছয়জন আমাকে ইউএনওর বাসায় তুলে নিয়ে আসেন। ওইখানে এনে ইউএনও আমাকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখিয়ে তাঁর ইচ্ছেমতো ভিডিও ধারণ করেন।’

অভিযোগ অস্বীকার করে ইউএনও আসাদুজ্জামান বলেছেন, ‘কামাল রাঢ়ীকে স্থানীয় লোকজন আমার কাছে দেখা করাতে রাত ১১টার দিকে নিয়ে এসেছিল। তবে কোনো অপহরণের ঘটনা ঘটেনি।’ কারা নিয়ে এসেছিলেন, তাঁদের তিনি চেনেন না দাবি করে বলেন, ‘আমি কামালকে বলেছি, তোমাকে ওসি সাহেব খুঁজছে। তুমি থানায় গিয়ে ওসি সাহেবের সঙ্গে দেখা করো।’

আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম রহমান বলেন, কামাল রাঢ়ী নামের এক ব্যক্তি তাঁকে অপহরণ করেছিলেন এমন অভিযোগ এনে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

বরগুনা জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, তুলে আনার বিষয়টি তাঁর জানা নেই। যদি এমনটা হয়ে থাকে তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া ইউএনও অফিসের কর্মচারী এনামুল হকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

আমতলীতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বরাদ্দের অভিযোগ নিয়ে আজ রোববার প্রথম আলোর দক্ষিণ সংস্করণে ‘টাকা নিয়ে ঘর বরাদ্দ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।