অভিযোগপত্র দাখিলের ১৪ মাস পরে বাদীর বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ

প্রতীকী ছবি

রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার কাঁচাবাড়ি বানিয়াপাড়া গ্রামের সায়েদা বেগম (৬০) হত্যা মামলার অভিযোগপত্র দাখিলের ১৪ মাস পরে মামলার বাদীর বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ এনে আদালতে পিটিশন দাখিল করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রংপুরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত বদরগঞ্জের বিচারক মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের আদালতে এ পিটিশনের শুনানি হয়েছে।

বাদীর বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ এনে আদালতে পিটিশন দাখিল করেছেন বদরগঞ্জের কাঁচাবাড়ি পেশকারপাড়া গ্রামের সাহাবুল হক। তবে সাহাবুল নিহত সায়েদার সম্পর্কে কেউ নন। এই পিটিশনের ব্যাপারে আদালত তাৎক্ষণিক কোনো আদেশ দেননি বলে নিশ্চিত করেছেন রংপুর জেলা জজ আদালতের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জিয়াউল ইসলাম।
মামলার নথিপত্র ঘেঁটে জানা গেছে, কাঁচাবাড়ি মৌজায় ২৯ শতক কৃষিজমি নিয়ে মমিনুল ও ইউনুছের মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরে ২০১৭ সালের ১৫ অক্টোবর সকালে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে লাঠির আঘাতে মমিনুলের ফুফু সায়েদা বেগম নিহত হন। এ ঘটনায় সেদিনই বদরগঞ্জ থানায় মমিনুল বাদী হয়ে ২২ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) শাহ আলম ২০১৯ সালের ১৩ জুলাই মামলায় নয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। অভিযোগপত্র দাখিলের ১৪ মাস পরে মামলার বাদী মমিনুলসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে সায়েদা বেগমকে হত্যার অভিযোগ এনে ১৭ সেপ্টেম্বর আদালতে পিটিশন দেওয়া হয়।

সাহাবুল হক আদালতে পিটিশন দাখিলের কথা এ প্রতিবেদকের কাছে প্রথমে অস্বীকার করলেও তিনি বৃহস্পতিবার পিটিশনের সপক্ষে আদালতে হাজির ছিলেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি কিছু জানি না। আমার বলার কিছু নেই।’

মলার অন্যতম আসামি ইউনুছ আলী স্থানীয় একটি প্রতিবন্ধী স্কুলের প্রধান শিক্ষক। পিটিশন দাখিলকারী সাহাবুল হচ্ছেন ওই স্কুলের পিয়ন। কৌশলে সাহাবুলকে বাদী করে অভিযুক্ত আসামিরা হত্যার দায় থেকে নিজেদের রক্ষার চেষ্টা করছেন।
মমিনুল ইসলাম, প্রথম মামলার বাদী

প্রথম মামলার বাদী মমিনুলের অভিযোগ, মামলার অন্যতম আসামি ইউনুছ আলী স্থানীয় একটি প্রতিবন্ধী স্কুলের প্রধান শিক্ষক। পিটিশন দাখিলকারী সাহাবুল হচ্ছেন ওই স্কুলের পিয়ন। কৌশলে সাহাবুলকে বাদী করে অভিযুক্ত আসামিরা হত্যার দায় থেকে নিজেদের রক্ষার চেষ্টা করছেন। সাহাবুলের দাখিল করা পিটিশনে ওই স্কুলের শিক্ষক, রিকশাভ্যানচালক ও তাঁর (মমিনুল) মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের নিকট আত্মীয়দের সাক্ষী করা হয়েছে।

মামলার বাদী মমিনুলের অভিযোগ, অভিযুক্ত আসামিরা প্রকাশ্যে পিটিয়ে তাঁর ফুফুকে হত্যা করেছেন। মূলত, মামলাটিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে আদালতে মিথ্যা পিটিশন দাখিল করা হয়েছে।

মমিনুলের মামলায় অভিযুক্ত আসামি ইউনুছ আলী বর্তমানে রংপুর জেলহাজতে রয়েছেন। গ্রেপ্তারের আগে তিনি দাবি করেছিলেন, সায়েদাকে তাঁরা হত্যা করেননি। জমি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে মমিনুল ও তাঁর সাঙ্গপাঙ্গরা সায়েদাকে হত্যা করে দায় তাদের ওপর চাপিয়েছেন। পুলিশ প্রভাবিত হয়ে তাদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন।