অভিযোগপত্রে নাম থাকলেও স্বপদে বহাল উত্তম

প্রতীকী ছবি

যশোরের মনিরামপুর উপজেলায় ত্রাণের চাল চুরি মামলায় উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান উত্তম চক্রবর্তীসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে সম্প্রতি অভিযোগপত্র দিয়েছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। তবে তিনি এখনো স্বপদে বহাল রয়েছেন। অথচ আইন অনুযায়ী অভিযোগপত্রে নাম আসার পর তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করার কথা।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সোমেন দাস চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই অভিযোগপত্র দাখিল করেন। সেখানে উত্তমকে পলাতক দেখানো হয়েছে।

অভিযোগপত্রে থাকা অন্য আসামিরা হলেন মনিরামপুর উপজেলার বিজয়রামপুর গ্রামের আবদুল্লাহ আল মামুন, তাহেরপুর গ্রামের শহিদুল ইসলাম, জুড়ানপুর গ্রামের জগদীশ দাস, আবদুল কুদ্দুস ও খুলনার দৌলতপুর মহেশ্বরপাশা গ্রামের ফরিদ হাওলাদার।

স্থানীয় সরকার বিভাগ যশোরের উপপরিচালক হুসাইন শওকত বলেন, আইন অনুযায়ী কোনো জনপ্রতিনিধি মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি হলে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করার কথা। কিন্তু উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান উত্তম চক্রবর্তীর চার্জশিটভুক্ত হওয়ার বিষয়টি এখনো তাঁদের নজরে আসেনি। দ্রুতই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযুক্ত অন্য ব্যক্তিরা হলেন মনিরামপুর উপজেলার বিজয়রামপুর গ্রামের আবদুল্লাহ আল মামুন, তাহেরপুর গ্রামের শহিদুল ইসলাম, জুড়ানপুর গ্রামের জগদীশ দাস, আবদুল কুদ্দুস ও খুলনার দৌলতপুর মহেশ্বরপাশা গ্রামের ফরিদ হাওলাদার।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, খুলনার মলিকতলা খাদ্যগুদাম থেকে সরকারি চাল ট্রাকে বোঝাই করে গত ৩ এপ্রিল রাতে মনিরামপুর খাদ্যগুদামে নেওয়া হয়। ওই রাতেই মনিরামপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তপন কুমার সিংহ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার বিজয়রামপুরের ভাই ভাই রাইস মিলে অভিযান চালিয়ে ৫৪৯ বস্তা সরকারি চাল উদ্ধার করে। পরে জানা যায়, মালিক আবদুল্লাহ আল মামুন ট্রাকে করে খাদ্যগুদাম থেকে ত্রাণের চাল তাঁর চালকলে নিয়ে আসেন। ওই চালের কোনো বৈধ কাগজপত্র না থাকায় মামুন ও ট্রাকচালক ফরিদের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে কালোবাজারির মাধ্যমে চাল মজুতের অভিযোগে মনিরামপুর থানায় একটি মামলা করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শিকদার মতিয়ার রহমানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আটক দুজনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। আদালতে তাঁরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।

জবানবন্দিতে তাঁরা জানান, মনিরামপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান উত্তম চক্রবর্তী, শহিদুল, জগদীশ ও কুদ্দুসের সহযোগিতায় তাঁরা চাল বিক্রি করেন। এর মধ্যে তদন্ত কর্মকর্তা বদল হয়। সর্বশেষ তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে ডিবি পুলিশের পরিদর্শক সোমেন দাস অভিযোগপত্র দেন।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ওই চাল ভাইস চেয়ারম্যান উত্তম কুমার চক্রবর্তী বেশি মুনাফার লোভে কালোবাজারির মাধ্যমে বিক্রি করে দেন। যার মূল্য ছিল ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা। প্রথমে উত্তম চক্রবর্তী ৪ লাখ টাকা নেন। পরে আরও ৮০ হাজার টাকা নিয়েছেন।

সৌমেন দাস বলেন, অভিযুক্ত ছয়জনের মধ্যে পাঁচজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাঁরা সবাই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। শুধু উত্তম চক্রবর্তী পলাতক রয়েছেন। তাঁকে ধরতে চেষ্টা চলছে।