আ. লীগ নেতার গুদাম থেকে সরকারি চাল জব্দ

জামালপুরের ইসলামপুরে এক আওয়ামী লীগ নেতার গুদাম থেকে ৯২২ বস্তা সরকারি চাল জব্দ করা হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সরকারি বরাদ্দের ধান-চাল কালোবাজারি করে এই গুদামে জমা করতেন। তাঁর গুদামটি সিলগালা করা হয়েছে।

জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় এক আওয়ামী লীগ নেতার গুদাম থেকে ভিজিডি ও বন্যার্তদের জন্য সরকারি বরাদ্দের ৯২২ বস্তা চাল জব্দ করা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাত ১১টার দিকে চালগুলো জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর গুদামটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।

ওই আওয়ামী লীগ নেতার নাম এস এম জাহাঙ্গীর আলম। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক। তিনি এলাকায় খাদ্য ব্যবসায়ী হিসেবেও পরিচিত। দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে সরকারি বরাদ্দের ধান-চাল ক্রয় কলোবাজারে করে ওই গুদাম থেকে বিক্রি করতেন বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।

জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) সহযোগিতায় ইসলামপুর পৌরসভার দক্ষিণ দরিয়াবাদ এলাকায় ওই নেতার গুদামে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান অভিযান চালান। এ সময় ৬০০ বস্তা ভিজিডি ও ৩২২ বস্তা বন্যার্তদের জন্য জিআর চাল জব্দ করা হয়।

আওয়ামী লীগ নেতার ভাষ্য, গুদামটি তাঁর হলেও এটি এক চেয়ারম্যানের কাছে ভাড়া দিয়েছেন। তিনি আগে ধান-চালের ব্যবসা করলেও এখন করেন না।

উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার গোয়ালেরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ তাঁর ইউনিয়নের ভিজিডি কার্ডধারী দরিদ্রদের ও বর্ন্যাতদের মধ্যে বিতরণের জন্য জিআর সরকারি বরাদ্দ পান। কিন্তু ওইসব চাল বিতরণ না করে কলোবাজারে ওই আওয়ামী লীগ নেতার গুদামে মজুদ করেন। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে এনএসআই জামালপুর কার্যালয়ের একটি দল গতকাল রাতে অনুসন্ধান চালিয়ে এর সত্যতা পায়। পরে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও থানা–পুলিশ ওই গুদামে অভিযান চালায়। তবে কাউকে আটক করা হয়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি অভিযোগ করেন, এই উপজেলায় টানা দুই মাস ভয়াবহ বন্যা চলেছে। ত্রাণের জন্য মানুষের মধ্যে চলছিল হাহাকার। সেখানে এসব চাল কালোবাজারে বিক্রি করা হয়েছে। এর সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবি জানান তাঁরা।


অভিযোগের বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা এস এম জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, 'গুদামটি আমার, ঠিক আছে। কিন্তু ওই চেয়ারম্যান গুদামটি ভাড়া দিয়ে মালামাল উঠাতেন। সেখান থেকেই মালামাল বিতরণ করতেন। চালগুলো আমি কিনিনি। আমি এক সময় ধান-চালের ব্যবসা করতাম। বর্তমানে এই ব্যবসা আমি বাদ দিয়েছি।'

ইসলামপুরের ইউএনও মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, একটি গুদাম থেকে ৯২২ বস্তা সরকারি চাল জব্দ করা হয়েছে। গুদাম সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।