আ.লীগ প্রার্থীর জয়ের পেছনে 'ব্যক্তি ইমেজ'

আবদুর রশিদ
আবদুর রশিদ

হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা ছিল সরকারদলীয় প্রার্থী ছাড়া অন্য প্রার্থীদের। তবে শেষ পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো অনিয়ম, সংঘর্ষ ছাড়াই নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে এ উপজেলায়। ভোটার উপস্থিতি ছিল ৬০ শতাংশ। আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবদুর রশিদ তালুকদার তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর প্রার্থীর চেয়ে ৮ হাজার ৭৭৪ ভোট বেশি পেয়ে জয়ী হয়েছেন। এলাকাবাসী বলছেন, এ জয়ে রাজনৈতিক প্রভাবের চেয়ে ব্যক্তি ইমেজ (ভাবমূর্তি) বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। নবগঠিত এ উপজেলায় স্বচ্ছ রাজনৈতিক ব্যক্তি হিসেবে তাঁরা আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে বেছে নিয়েছেন।

হবিগঞ্জ সদর উপজেলার অধীনে থাকা শায়েস্তাগঞ্জকে ২০১৭ সালের ২০ নভেম্বর দেশের ৪৯২তম উপজেলা ঘোষণা করা হয়। তিনটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠন করা এ উপজেলার নির্বাচন গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হয়। এতে চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবদুর রশিদ তালুকদার নৌকা প্রতীকে ১৬ হাজার ৯৩৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী (স্বতন্ত্র প্রার্থী) আনারস প্রতীকে পান ৮ হাজার ১৬৩ ভোট। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আলী আহমদ খান পান ২ হাজার ৩২৩ ভোট। বিজয়ী প্রার্থীর নিকটতম প্রার্থীর এ নির্বাচন নিয়ে কোনো অভিযোগ না থাকলেও ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আলী আহমদ খান ভোট গ্রহণ শেষে গত মঙ্গলবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলন করে এ ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবদুর রশিদ তালুকদারের সমর্থক লোকজন অধিকাংশ কেন্দ্রে তাঁর এজেন্টদের জোর করে বের করে দিয়ে জাল ভোট দিয়ে তাঁর জয় ছিনিয়ে নিয়েছেন।

এদিকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে ছোটখাটো দু-একটি ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে এ উপজেলায়। তবে ভোটার উপস্থিতি ছিল কম। মোট ৪৫ হাজার ৬৬৬ জন ভোটারের মধ্যে ওই দিন ভোট প্রয়োগ করেছেন ২৭ হাজার ৪২৩ জন। এ উপজেলায় ৬০ শতাংশ ভোটার ভোট দেন।

শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার বিরামচর এলাকার ভোটার নুরুল ইসলাম বলেন, প্রথম দিকে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে ভোটার ও প্রার্থীদের মধ্যে শঙ্কা ছিল। তবে নির্বাচনে এ নিয়ে কোনো সমস্যা তৈরি হয়নি। যাঁরা কেন্দ্রে গেছেন, সবাই শান্তিপূর্ণভাবেই ভোট প্রয়োগ করেছেন।

শায়েস্তাগঞ্জ পৌর এলাকার বাসিন্দা সিরাজ মিয়া বলেন, এ উপজেলায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী জয়ী হয়েছেন তাঁর ব্যক্তি ইমেজের কারণে। তিনি এ এলাকায় একজন পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত। যে কারণে ভোটাররা তাঁকে বেছে নিয়েছেন।

এ ছাড়া নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১০ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তাঁদের মধ্য থেকে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়ী হন মুক্তা আখতার ও ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন গাজিউর রহমান। তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।