‘আইনমন্ত্রীর আশ্বাসে’ ফরিদপুরে আইনজীবীদের কর্মসূচি স্থগিত
জেলা সদর থেকে পাঁচটি আদালত ভাঙ্গায় যাচ্ছে না—‘আইনমন্ত্রীর এমন আশ্বাসে’ ফরিদপুরে আইনজীবীদের আদালত বর্জন কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। আগামীকাল মঙ্গলবার আদালতে যোগ দেবেন আন্দোলনকারী আইনজীবীরা। আজ সোমবার সকালে আন্দোলনের সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করার পর দুপুরে আইনমন্ত্রীর আশ্বাসে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ফরিদপুর জেলা সদরে অবস্থিত ভাঙ্গা, সদরপুর, চরভদ্রাসন, সালথা ও নগরকান্দা উপজেলার দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত ভাঙ্গায় স্থানান্তরের উদ্যোগ নেওয়ায় গতকাল রোববার থেকে পাঁচ দিনের আদালত বর্জন শুরু করে ফরিদপুর জেলা আইনজীবী সমিতি। ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন নিয়ে গঠিত ফরিদপুর-৪ আসনের স্বতন্ত্র সাংসদ মুজিবর রহমান ওরফে নিক্সন চৌধুরীর এক ডিও লেটারের কারণে এ উদ্যোগ নেয় আইন মন্ত্রণালয়। ৪ মার্চ ফরিদপুরের জেলা ও দায়রা জজ এ–সংক্রান্ত ইতিবাচক মতামত দিয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠান। ৯ মার্চ বিষয়টি জানাজানি হলে আইনজীবীদের সঙ্গে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন ফরিদপুরের বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিরা।
আজ আদালত বর্জনের দ্বিতীয় দিনে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আইনজীবীরা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন। আদালতপাড়া হিসেবে খ্যাত স্বাধীনতা চত্বরে এ কর্মসূচি পালিত হয়। এ সময় বক্তব্য দেন আইনজীবী সৈয়দ মোদাররেছ আলী ইছা, জসীমউদ্দিন মৃধা, হাবিবুর রহমান, নারায়ণ চন্দ্র সাহা প্রমুখ। তাঁরা বলেন, ২০০ বছরের ঐতিহ্য ফরিদপুরের আদালতকে কোনোভাবেই একটি উপজেলায় নিতে দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে আরও কঠোর আন্দোলন করা হবে।
পাঁচটি উপজেলার দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত ভাঙ্গায় স্থানান্তরের উদ্যোগ নেওয়ায় আদালত বর্জন করে বিক্ষোভ করেন ফরিদপুর জেলা আইনজীবী সমিতি।
ওই সভায় উপস্থিত হয়ে প্রবীণ আইনজীবী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহা বলেন, এ বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে তাঁর মুঠোফোনে কথা হয়েছে। আইনমন্ত্রী কথা দিয়েছেন, ফরিদপুর জেলা সদর থেকে দেওয়ানি বা ফৌজদারি কোনো আদালত ভাঙ্গায় নেওয়া হবে না। সুবল চন্দ্র সাহা এ পর্যায়ে আইনজীবীদের আদালত বর্জনের কর্মসূচি স্থগিত করে কাজে যোগ দিতে আহ্বান জানান। এ সময় আন্দোলনরত আইনজীবীরা এ ব্যাপারে মন্ত্রীর লিখিত নির্দেশনা চান এবং লিখিত নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলনের কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেন।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবু ওমর মো. খালেদ দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, পরে আন্দোলনকারীদের বুঝিয়ে আদালত বর্জনের কর্মসূচি প্রত্যাহার করে ৩০ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত করতে রাজি করানো হয়েছে। ৩০ মার্চের মধ্যে এ–জাতীয় লিখিত নির্দেশনা না এলে পুনরায় আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
গত শুক্রবার ‘ফরিদপুরের পাঁচটি উপজেলা আদালত স্থানান্তরের প্রতিবাদ’ ও গতকাল ‘ভাঙ্গায় আদালত স্থানান্তরের উদ্যোগের প্রতিবাদ’ শিরোনামে প্রথম আলোর ছয়ের পাতায় দুটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।